নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ নাছির উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম লিংকনের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে সংগঠনটির সদস্যরা। গতকাল বুধবার দুপুরে সিরাজদিখান প্রেসক্লাবের কার্যালয়ে রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যদের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি জাবেদুর রহমান যোবায়ের তার বক্তব্যে বলেন, একজন সংবাদকর্মী হিসেবে সংবাদ সম্মেলন করতে হবে এটা কখনো আশা করিনি। আপনারা জানেন, সম্প্রতি এ উপজেলায় ‘সিরাজদিখান রিপোর্টার্স ইউনিটি’ নামে একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। সেখানে আমাকেও সহ-সভাপতি রাখা হয়। এছাড়া সহকর্মী আজাদ বিন আজম নাদভীকে সাংগঠনিক সম্পাদক, আনিসুর রহমান নিলয়কে দপ্তর সম্পাদক, মো. আমির হোসেন ঢালীকে প্রচার ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, আব্দুল আউয়াল আশিককে শিক্ষা ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক, মেহেদী হাসান সুমনকে কার্যকরী সদস্য, আলী আহমেদ চৌধুরী ও কৌশিক মন্ডল আকাশ, নাদিম হায়দার সেন্টু, রোমান হাওলাদারকে সদস্য করা হয়। কমিটি গঠনের পর থেকে সভাপতি নাছির উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম লিংকনের নেতৃত্বে আমরা সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেই। এই রিপোর্টার্স ইউনিটির ব্যানারে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি অনুষ্ঠান সফল করতে আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা এবং শ্রম ছিল। কিন্তু বর্তমানে গুছানো সংগঠনকে স্বেচ্ছাচারিতায় ও অনিয়মের রাজ্যে পরিণত করেছে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কর্মকান্ডের কথা অতি দুঃখের সাথে বলতে হয়, তাদের প্রতিটা কর্মকান্ড গঠণতন্ত্র বহির্ভূত। তাদের এহেন কর্মকান্ড আমাদেরকে মর্মাহত করেছে। তাদের নানা একক সিদ্ধান্ত সংগঠনের ভিতরে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। কার্যকরী কমিটি থাকা সত্ত্বেও কোন ধরনের আলোচনা ছাড়াই সংগঠনের নিয়মবহির্ভূত নতুন নতুন সদস্য নিয়োগ দিচ্ছেন যারা কোন সংবাদকর্মী না। তারা দু’জন আলোচনা ছাড়াই সংগঠনের নামে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে। সংগঠনের বিষয়ে কোন ধরনের জবাবদিহিতা নাই, চাইতে গেলে সংগঠন থেকে চলে যেতে বা অব্যাহতি নিতে বলেন। এও বলেন, আমরা এভাবেই সংগঠন চালাবো কারো পছন্দ হলে থাকো না হলে চলে যাও। ইতোমধ্যে ঈদ পুনর্মিলনী ও বৈশাখ উদযাপন করা হয়। সে অনুষ্ঠানে সভাপতি তার বক্তব্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, আমরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দু’জন ছাড়া উপজেলার সকল সাংবাদিক মাটির বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছে। শুধু আমরাই মাটির পক্ষে ছিলাম। তার শিষ্টাচার বহির্ভূত এমন বক্তব্যে আমরাসহ এ উপজেলায় কর্মরত সকল সাংবাদিকের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। সংগঠনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের আগে ও পরে আয়ের উৎস কি বা ব্যয় কি, তা প্রকাশ করে না। এছাড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের উপজেলায় অন্যান্য কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে সখ্যতা বা সুসম্পর্ক বজায় রাখতে নিষেধ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ বিন আজম নাদভী তার বক্তব্যে বলেন, আপনারা আরো অবগত আছেন, ইউনিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তারাও সিরাজদিখান প্রেসক্লাবের সদস্য। তারা বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন। মূলত ইউনিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের একান্ত সিদ্ধান্তেই রিপোর্টার্স ইউনিটির সকল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং হবে। যা আমরা মেনে নিতে পারছি না। এ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সিরাজদিখান রিপোর্টার্স ইউনিটি থেকে আমরা সম্পাদকীয় ৬ জনসহ মোট ১১ জন সদস্য স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলাম এবং রিপোর্টার্স ইউনিটিকে বয়কট করলাম। আজকের পর থেকে রিপোর্টার্স ইউনিটির সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই। যদি তারা আমাদের নামে কোন অপকর্ম করে তার দায় আমরা নিবো না। তাছাড়া আমাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার মিথ্যা তথ্য বা কোনভাবে হেয় করতে চেষ্টা করলে আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে জবাব দিবো।
সিরাজদিখান রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নাছির উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম লিংকনের নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য দেন রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রচার ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আমির হোসেন ঢালী ও দপ্তর সম্পাদক আনিসুর রহমান নিলয়।
সিরাজদিখান প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিরাজদিখান প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন, সাবেক সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম বাবুল, সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন সালমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ সিরাজদিখান উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ।