আরাফাত রায়হান সাকিব॥ চলমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও নির্মান শ্রমিকদের প্রচেষ্টায় এগিয়ে চলছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মান কাজ । ২৬তম স্প্যান বসানোর ১৮দিনের মাথায় আজ শনিবার(২৮ই মার্চ) সেতুর ২৭ ও ২৮নং পিয়ারে বসানো হয়েছে ২৭ তম স্প্যান ‘৫-সি’। সকাল ৯টা ২০মিনিটে সেতুর জাজিরা প্রান্তে ২৭তম স্প্যানটি বসানো হয় । এতে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৪হাজার ৫০ মিটার অংশ অর্থাৎ ৪কিলোমিটারে বেশি অংশ। পদ্মাসেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মোঃ আব্দুল কাদের মুন্সীগঞ্জের কাগজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
তিনি জানান, কুয়াশা থাকলে সাধারণত সকাল ৮টায় কাজ শুরু করা হয়, তবে আবহওয়া অনুকূল থাকায় সকাল ৭টা থেকেই স্প্যানটি বসানোর কাজ শুরু হয়। ২৭ ও ২৮নং পিয়ারের কাছে স্প্যানবাহী নোঙর করা ভাসমান ক্রেনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে উপরে তুলে নির্ধারিত স্থানে স্প্যানটি বসানো হয়। এতে সময় লাগে ২ঘন্টা ২০মিনিট। বেলা ৯টা ২০মিনিটে স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়।
তিনি আরো জানান, ৪১টি স্প্যানের মধ্যে আর ১৪টি স্প্যান বসানোর কাজ বাকি রইলো। এরমধ্যে মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে ১২টি রয়েছে, অন্য ২টি চীনে রয়েছে। ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৪১টি পিয়ারের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে বাকি ১টি পিয়ারের কাজ শেষ হবে।
এর আগে শুক্রবার (২৭মার্চ) সকাল ৮টার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ‘তিয়ান-ই’ ভাসমান ক্রেনে স্প্যানটি রওনা করে। বেলা ১০টার দিকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ২৭ ও ২৮ নং পিলারে কাছে পিলারের কাছে এসে পৌঁছে ক্রেণ নোঙর করে রাখা হয়েছিলো।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ২৭টি স্প্যান। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।