সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ; সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবীর
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে এমন শক্তি কারো নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। এ নির্বাচনে শেখ হাসিনা তাকেই দলের মনোনয়ন দিবেন যিনি এলাকায় জনপ্রিয়। আপনাদের কাছে যিনি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তাকে মনোনয়ন দিবেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে যার যার নির্বাচনী এলাকার আমলনামা প্রতিদিন যাচ্ছে। তিনি সেগুলো নিয়ে যাচাইবাছাই করে মনোনয়ন দিবেন। এরপরও কারও পছন্দের প্রার্থীকে যদি মনোনয়ন না দেওয়া হয়, যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হউক শেখ হাসিনার কথা মনে করে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করতে হবে।
গতকাল শনিবার দুপুর ৩টায় মুন্সীগঞ্জ শহরের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আজম আরো বলেন, জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ১৩’শ কর্মকর্তাদের ফাঁসি দিয়েছিলো। প্রতিরাতে কারাগারে ৮ জন করে ফাঁসি দেওয়া হতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য।
তিনি আরো বলেন, ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে হত্যা করেছিলো। বহুদলীয় গণতন্ত্রে জিয়াউর রহমান যতদিন ক্ষমতায় ছিলো ততদিন মুক্তিযোদ্ধারা সরকারী অফিস আদালতে নিজেদের পরিচয় দিতে পারত না। জিয়াউর রহমান রাজাকার আলবদরদের মোটাতাজা করতে বিভিন্ন কর্মসূচি দিতেন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না যার ঘরে ফ্রিজ-টিভি নেই। উন্নয়নের এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে হলে শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় নিয়ে আসতে হবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসতে না পারলে ক্ষমতায় কে আসবে? জিয়ার ছেলে তারেক আসবে? যেই তারেক বাংলাদেশকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করেছিল, খালেদা-তারেক ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগকে নিঃস্ব করার জন্য ২০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এড. মৃণাল কান্তি দাস ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হিরু। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবীর মাষ্টারের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সোহানা তাহমিনা, মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব, টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কাজী আব্দুল ওয়াহিদ, গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন, গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ, মিরকাদিম পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম শাহীন প্রমুখ।
জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে ২য় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পুনরায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন আফসার উদ্দিন ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সামসুল কবির। পরে হাজারো নেতাকর্মীরা আনন্দ অনুভূতি প্রকাশ করে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলে স্লোগান দেন।