নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়ায় অতি বৃষ্টি কিংবা সামান্য বৃষ্টি মোট কথা বৃষ্টি হলেই অনেক গ্রামে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। নগরীর সুযোগ-সুবিধা না থাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে নেই কারো দায়বদ্ধতা। জনদূর্ভোগ চরমে। এখনই সময় এই বিষয়ে ভাবার। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি, তেতৈতলা, হোসেন্দী ইউনিয়নের জামালদী বাসস্ট্যান্ড সড়ক, টেঙ্গারচর ইউনিয়নের ভাটেরচর, ভবেরচর ইউনিয়নের বাসস্ট্যান্ড সড়ক, কলেজ রোড, ভবেরচর বাজার, আনারপুরা সড়ক, লক্ষীপুরা সড়ক, বাউশিয়া ইউনিয়নের পুরান বাউশিয়া, দড়ি বাউশিয়া, চর বাউশিয়া বড়কান্দী, গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের নতুন চরচাষী সড়ক, ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দীসহ উপজেলার অনেক গ্রামেই এই জলাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে। “গ্রাম হবে শহর ” সরকারের এই মহাপরিকল্পনা ক্রমশ বাস্তবায়নের ফলে শিল্পাঞ্চল খ্যাত গজারিয়ায় গ্রামগুলো অনেকটাই নগরায়ণে পরিণত হচ্ছে। জলাবদ্ধতা শহর ও নগরের সবচেয়ে পুরনো ও বড় সংকট। এই সমস্যা রোধে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ দিচ্ছেন। ওয়াসা, সিটি করপোরেশনসহ কিছু সেবা সংস্থা এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। ওয়াসায় যুক্ত হয়েছে পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প। তারপরও শহরগুলোর জলাবদ্ধতা নিরসনে সেবা সংস্থাগুলোকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেখানে ইউনিয়ন পরিষদ এর সক্ষমতায় এই সমস্যা কতটুকু মোকাবিলা করতে পারবে ? গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, এই সমস্যা মানুষেরই সৃষ্টি। শিল্পায়নের আগ্রাসন আর গ্রাম উন্নয়নে অপরিকল্পিতভাবে ভরাট করা হয়েছে সরকারী খাল, হালট, নালা, নদী। ভরাট করা হয়েছে ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর। গ্রামীণ রাস্তাগুলো নির্মাণের ফলে দু’পাশেই গড়ে উঠছে বাড়িঘর। যার ফলে বৃষ্টির পানি জমে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ ড্রেন নির্মাণ করেছে, বর্তমানেও করছে। কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পরে আর রক্ষণাবেক্ষণ না করার ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে ইউনিয়ন পরিষদ ড্রেন নির্মাণ করলেও জনবল ও অর্থের অভাবে তা রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা বাড়ানো উচিত। তাই এখন থেকে গ্রামীণ জলাবদ্ধতা নির্মূলে মহাপরিকল্পনা ও গ্রাম উন্নয়নে ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণ করতে হবে। সেই সাথে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। দখলকৃত খাল, হালট, নালা পুনরুদ্ধার করে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে কোথায় ত্রুটি ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গজারিয়ায় জলাবদ্ধতা নিরসনে এখন থেকে এলজিইডির রাস্তার সাথে ড্রেন নির্মাণের জন্য একসাথেই প্রকল্প থাকবে। আর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থ বরাদ্দের চিন্তাও আমরা করছি।