নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দী ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসতঘরে গত সোমবার আত্মহত্যাকারী তরুণী ইতির দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তার হাতের লেখা চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। যাতে প্রেমঘটিত বিষয়টি অনেকাংশেই স্পষ্ট।
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় উপজেলার বালুয়াকান্দী ইউনিয়নের বড় রায়পাড়াস্থ শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে জানাজা শেষে গ্রামের গোরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। নিহত ইতির আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সেইসাথে শোকের ছায়া নেমে আসে।
জানা যায়, একই এলাকার বাসিন্দা নিহত মোতালেবের ছেলে কাউসার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইতির সাথে দীর্ঘদিন সম্পর্ক করে আসছিল। সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে মেয়ের অভিভাবকগণ বিয়ের প্রস্তাব পাঠালে ছেলের পরিবার থেকে এ সম্পর্ক অস্বীকৃতি জানানোর পাশাপাশি তাদের বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এই প্রেমঘটিত ঘটনায় ইতি আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন নিহত ইতির মা হালিমা আক্তার। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনায় কাউসারকে জিজ্ঞাসা করতে তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে কাউসারের মা হুসু আক্তার সম্পূর্ণ বিষয়টিকে মিথ্যা বলে জানিয়েছেন। তবে গত সোমবার মৃতদেহের পাশেই কাউসারের সাথে সম্পর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে একটি চিরকুট পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহত ইতির পরিবারের সদস্যরা। চিরকুটে ইতি লিখেন, “আমি কাউসারকে আমার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতাম। ও আমায় যখন যা বলতো আমি তাই করতাম। আমার লাইফে যা যা সত্য ছিলো, আমি তাকে সব সত্য বলেছি। কিন্তু কাউসার আমাকে বিশ্বাস করলো না। এমন কিছু নেই যা আমি ওর জন্য করিনি। আমি কাউসারের সাথে বাঁচতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিন্তু পারলাম না। কাউসার আমাকে বাঁচতে দিলো না। আমি কখনো আমার ফ্যামিলির কাছে আপন ছিলাম না আর না প্রিয় মানুষটার আপন ছিলাম, আমি হেরে গেছি কাউসার, আমি হেরে গেছি……”।
উল্লেখ্য, গত সোমবার মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে নিজের ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় এক তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার করে গজারিয়া থানা পুলিশ। নিহত তরুণীর নাম ইতি আক্তার (১৯)। সে বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামের সালাউদ্দিনের মেয়ে বলে জানা গেছে।
নিহত ইতি তিনভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় ও রিকশাচালক সালাউদ্দিনের মেয়ে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে আত্মহত্যার নেপথ্যে যারা আছেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন নিহতের মা ও তার পরিবার। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গা ঢাকা দিয়েছে কথিত প্রেমিক কাউসার।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা সোহেব আলী জানান, চিরকুটের বিষয়টি জানা নাই। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি আত্মহত্যা বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। এ বিষয়ে একটা অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।