নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়া উপজেলায় ইতি আক্তার (১৮) নামে এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদের উদ্ধার করেছে গজারিয়া থানা পুলিশ। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের দরজা ভেঙে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ইতি আক্তার (১৮) উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা সালাউদ্দিনের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত ইতি আক্তারের বাবা সালাউদ্দিন দরিদ্র রিকশাচালক আর মা হালিমা বেগম স্থানীয় কয়েল ফ্যাক্টরির শ্রমিক। গত প্রায় দেড় বছর ধরে তারা বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক নম্বর ঘরে বসবাস করছেন। সালাউদ্দিন ঢাকাতে রিকশা চালান। সুযোগ পেলে মাসে দু’একবার বাড়িতে আসেন। তার তিন সন্তানের মধ্যে ইতি দ্বিতীয় ছিল। মা হালিমা বেগম কাজে গেলে দিনের বেশিরভাগ সময় বাড়িতে একাই থাকতেন ইতি। মাঝেমধ্যে বাঁশ দিয়ে মাছ ধরার চাঁই বানানোর কাজ করতেন তিনি।
ইতির খালাতো ভাই সবুজ মিয়ার স্ত্রী সুখী আক্তার বলেন, গতকাল সোমবার সকাল ৮টার দিকে তিনি বেশ কয়েকবার ইতির মোবাইলে কল দেন। কিন্তু সে রিসিভ করেনি। পরবর্তীতে সে তাদের বাড়িতে আসেন এবং ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করা দেখতে পান। অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করে কোন শব্দ না পাওয়ায় ইতির নানী আয়েশা বেগম ও ছোট ভাই নাঈমকে ডেকে আনেন। তারা সবাই মিলে ডাকাডাকি করার পরও দরজা না খোলায় বিষয়টি তারা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং থানা পুলিশকে জানান। পরবর্তীতে বেলা ১১টার দিকে থানা পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় ইতির লাশ দেখতে পায়।
নিহত ইতির মা হালিমা বেগম বলেন, তিনি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার কর্মস্থল কয়েল ফ্যাক্টরির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। তার একমাত্র ছেলে নাঈম বয়সে ছোট হওয়ায় খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। দিনের বেশিরভাগ সময় বাসার বাহিরে থাকে সে। পড়ালেখা না করায় ইতি বাসাতে একাই থাকতো। কি কারণে সে এ কাজ করলে তা তার জানা নেই। তবে গত এক দেড় মাস ধরে সে কাউসার নামের একটি ছেলের সাথে ফোনে কথা বলে এ বিষয়টি তারা খেয়াল করেন এবং ছেলের বাসায় মেয়েকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ছেলের মা বলেছে, কাউসার যদি বিয়ে করে খাওয়াতে পারে তাহলে করুক বিয়ে।
এ বিষয়ে কাউসারের মা হোসনে আরা হুসুর সাথে কথা বললে তিনি বিষয়টি মিথ্যা বলে অস্বীকার করেন। তার ছেলে কোথায় আছে জানতে চাইলে বাড়িতে নেই বলে এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার এস আই সিকান্দার আলী বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসে ইতির লাশ উদ্ধার করি। বিষয়টিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে করছি। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে। তার মরদেহের পাশেই তার একটি মোবাইল ফোনটি পাওয়া গেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা সোহেব আলী জানান, আত্মহত্যার ঘটনা শুনেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গজারিয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে নিজের ঘর থেকে তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
আগের পোস্ট