নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে সরকারি সিদ্ধান্তেই চলছে জেলাভিত্তিক টানা ৯ দিনের কঠোর লকডাউন। কোন রকম ঘর থেকে বাহিরে বের হতে পারছে না মানুষ। কাজকর্ম ফেলে অবসরে কোন রকম দিন কাটাচ্ছে বাড়িতে বসে। হঠাৎ লকডাউন পড়ায় বিভিন্ন এনজিওর কিস্তি নিয়ে গজারিয়ায় নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপাকে। যেখানে মানুষকে ঘরে খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেখানে তারা কিস্তি কিভাবে দেবেন এ নিয়ে আছেন বড় বিপাকে। ইতিমধ্যে অনেক এনজিও কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন কিস্তি আদায় করতে। অনেকে কিস্তি দেওয়া নিয়ে করছেন ঝামেলা। ইতিমধ্যে কিস্তির ভয়ে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গজারিয়ায় শিক্ষক, কৃষক, ভ্যান চালক, দিন-মজুর, জেলে, তাঁতী ও ছোট-বড় বিভিন্ন ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ প্রয়োজনে বিভিন্ন শর্তে বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে কিস্তিতে টাকা তুলে থাকেন। পরে সেই টাকা আস্তে আস্তে শোধ করেন বিভিন্নভাবে। কিন্তু এখন করোনা ভাইরাসের লকডাউনে কাজকর্ম সব বন্ধ থাকায় কিস্তি দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গজারিয়ার নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষ। তবে এইসব এনজিওর সাথে যুক্ত থাকা বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, করোনার প্রথম ধাপে কিস্তির ব্যাপারে নির্দেশনা ছিল সরকারীভাবে। কিন্তু এ লকডাউনের সময় এখনো কোন নির্দেশনা না পাওয়ার কারণে কিস্তি আদায় করা নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। এসময় কিস্তি দেওয়া নিয়ে গ্রাহকরা বিভিন্ন ঝামেলায় জড়াচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের এক ক্ষুদ্র দোকানী বলেন, আমি এক এনজিও থেকে ৮০ হাজার টাকা লোন তুলেছিলাম ঈদকে সামনে রেখে দোকানে মাল তোলার জন্য। লকডাউনের ভিতরে বাজারের দোকানপাট বন্ধ থাকায় একটি কিস্তি দিতে দেরি হয়েছে তারপরও এদের কোন ছাড় নেই। এসময় তিনি আরো বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিকাশ নাম্বার দিচ্ছে বিকাশ করে দিতে বলছেন। লকডাউনে যেখানে এই গজারিয়ায় সাধারণ মানুষ কিভাবে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার খাবেন এ নিয়েই কপালে ভাঁজ, সেখানে বিভিন্ন এনজিওর কিস্তির চাপ নিয়ে সাধারণ দিনে আনা দিনে খাওয়া মানুষগুলো পড়েছেন বড় বিপাকে। তবে একাধিক এনজিও গ্রাহকদের জোর দাবি, এই লকডাউনের সময় কিস্তি আদায় কিছুদিন বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। গজারিয়ায় সেবা প্রদানকারী এনজিওর ম্যানেজারগণের উদ্দেশ্যে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শুধু যারা স্বেচ্ছায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে চায় তাদের কিস্তি গ্রহণ করার অনুরোধ করছি। একইসাথে এ বিষয়ে সরকারের সকল নির্দেশনা মেনে কার্যক্রম পরিচালনার অনুরোধ করেন।
গজারিয়ায় কঠোর লকডাউনেও চলছে কিস্তি আদায়
আগের পোস্ট