নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মোসা. হোসনে আরা (১৮) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। শ্বশুর ফুল মিয়া বলছেন, তার পুত্রবধূ হোসনে আরা আকস্মিক মারা গেছেন। বাবা-মা বলছেন, তার মেয়ে হোসনে আরাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে মেয়ের জামাতা ইসমাইল হোসেন। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা, সমালোচনা।
নিহত মোসা. হোসনে আরা হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার স্বজন গ্রামের আব্দুল রাজ্জাকের মেয়ে। চাকুরির সুবাদে শ্বশুর ও স্বামীর সঙ্গে গজারিয়া উপজেলার টেঙ্গারচর ইউনিয়নের বিষদ্রোন ভাটেরচর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন। গতকাল শনিবার দুপুরে গৃহবধূর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে বিষদ্রোন ভাটেরচর পরিদর্শনে আসেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান। এর আগে গেল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বিষদ্রোন ভাটেরচর ভাড়া বাসায় হোসনে আরা মারা যায়।
নিহতের শ^শুর ফুল মিয়া জানান, তার পুত্রবধূ হোসনে আরা একটি কোম্পানিতে নাইট ডিউটি করে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাসায় আসে। এসময় তার ছেলে ইসমাইলও বাসায় ছিলো। ইসমাইল তার স্ত্রীর কাছে খাবার চাইলে স্ত্রী বলে আমার শরীর ভালো নেই। পরে তার ছেলে ইসমাইল নিজে খাবার নিয়ে খেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ঘন্টাখানেক পর বাসায় এসে তিনি তার পুত্রবধূ হোসনে আরাকে ডাকাডাকি করেন। সাড়া শব্দ না করলে আশপাশের লোকজনদের সহায়তায় এক ফার্মেসীতে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা আব্দুল রাজ্জাক জানান, ইসমাইল হোসেনের প্রথম স্ত্রী আছে। আমার মেয়েকে প্রেম করে বিয়ে করে ইসমাইল। বিয়ের কিছুদিন এলাকায় থাকার পর গজারিয়ায় চলে আসে তারা। আমার মেয়েকে ইসমাইল শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
গজারিয়া ও লাখাই থানা সূত্রে জানা যায়, গজারিয়া থানাকে অবহিত না করে ইসমাইল হোসেন অ্যাম্বুলেন্স করে তার স্ত্রীর লাশ নিয়ে হবিগঞ্জের লাখাই থানা এলাকায় নিয়ে যায়। পরে নিহতের পরিবারের লোকজন অভিযোগ তোলেন, ইসমাইল হোসেন তার স্ত্রী হোসনে আরাকে হত্যা করে তার লাশ নিয়ে এসেছে। এসময় বিক্ষুব্ধ লোকজন পুলিশকে খবর দিলে লাখাই থানার পুলিশ স্বামী ইসমাইল হোসেনকে আটক করে। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে লাখাই থানার এসআই ভজন চন্দ্র দাস জানান, নিহতের বাবা ফুল মিয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইসমাইলকে আটক করা হয়েছে।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা সোহেব আলী জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু।