নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত আড়ালিয়া-আব্দুল্লাহপুর গ্রামে এলজিইডি’র একটি রাস্তা গ্রাম্য নোংরা রাজনীতির প্যাঁচে বাঁধার মুখোমুখী। দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণের আশায় থাকা সাধারণ গ্রামবাসীর মাঝে স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কা। জানা যায়, বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের কুমিল্লা জেলার সীমান্তবর্তী ২টি গ্রাম আড়ালিয়া ও আব্দুল্লাহপুরবাসীর একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছিল বর্ষাকালে নৌকা আর সুদিনে নৌকার পাশাপাশি পায়ে হাঁটার পথ। বর্তমান সরকারের আমলে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে মাটি ভরাটসহ প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তায় ইটের সলিং করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এলজিইডি এ রাস্তাটি অর্থাৎ আড়ালিয়া ডেঙ্গর আলী ফকিরের বাড়ি হতে বোয়ালখালী গুদারাঘাট পর্যন্ত ১৪০০ মিটার রাস্তা পিচ ঢালাই করার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন বছর খানেক আগে। মাঝখানে মহামারী করোনার কারণে ঠিকাদার নিয়মিতভাবে কাজটি শেষ করতে পারেননি। গত ক’মাসে নিয়মিতভাবে কাজটি করে আড়ালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা পর্যন্ত প্রায় ৬৫০ মিটার কাজ সম্পন্ন করেন। এরপর আর কাজটি এগিয়ে নেওয়ার মত পরিস্থিতি নেই। আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রকল্পটি হয়তো এখানেই শেষ হয়ে যাবে। সরেজমিনে ঘুরে ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আড়ালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ওয়ালের সাথে লাগোয়া একটি একতলা ভবন, মাঝখান দিয়ে যানবাহন চলাচলের কোন সুযোগ নাই। তবে হাঁটার উপযোগী পথ রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের জমি দীর্ঘ প্রায় বিশ বছর যাবৎ জোরপূর্বক দখল করে ভবন নির্মাণ করে রাখছে একটি প্রভাবশালী পরিবার। যারা গ্রামেই বসবাস করে না, বছরে একবেলা, আধবেলার জন্য কখনো হয়তো আসে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বাড়ির মালিক অধ্যাপক আব্দুল জলিল, তিনি দেশের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ছিলেন। তিনি মারা গেছেন তাই উনার ওয়ারিশগণই এই সম্পত্তির মালিক। উনার এক ছেলে কর্নেল (অবঃ) মামুনুর রশিদ। পারিবারিকভাবেও উনাদের রয়েছে ঐতিহ্য। দেশবরেণ্য অনেকে জন্মেছেন এই পরিবারে। এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কর্নেল (অবঃ) মামুনুর রশিদ এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমরা বরাবরই রাস্তায় জায়গা দেওয়ার পক্ষে। যেখানে আমরা বসতবাড়ির ভবন ভেঙ্গে রাস্তায় জায়গা দিতে প্রস্তুত সেখানে রাস্তার জন্য জোরপূর্বক বাড়ি ভাঙ্গতে চাওয়া কতটা যৌক্তিক। সার্বিক বিষয়ে স্থানীয় সুশীল সমাজের লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জায়গা দেওয়ার বিষয়ে জলিল সাহেব এর পরিবার একটা পর্যায়ে রাজী থাকলেও গ্রামের একটা কুচক্রী মহলের অপপ্রচারের কারণে উনারা এই মুহূর্তে জায়গা দিতে অনীহা প্রকাশ করায় গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভাঙ্গার পথে। তাদের আশা নিরীহ এই জনসাধারনের কথা চিন্তা করে সর্বশেষে উনারা জায়গাটা ছেড়ে দিবেন। এ বিষয়ে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, আমরা ইতিমধ্যে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনভাবই সমাধান করতে পারিনাই। তাই বাধ্য হয়েই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি পাঠিয়েছি।
গজারিয়ায় গ্রাম্য রাজনীতির মারপ্যাঁচে রাস্তা নির্মাণ বন্ধের পথে ; স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কায় গ্রামবাসী
আগের পোস্ট