নিজস্ব প্রতিবেদক
গজারিয়ায় পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে কর্মস্থলে যেতে শুরু করেছে মানুষ। এতে উপজেলার বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে, অতিরিক্ত যাত্রী যার ফলে ভাড়া নৈরাজ্যে সৃষ্টি হয়েছে ভোগান্তি। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে বাড়ি থেকে শিল্প-কারখানায় কর্মরত ও সরকারি কর্মচারীদের কর্মস্থলে ফিরে যেতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়কে কেন্দ্র করে অসাধু গাড়ি মালিক সমিতির সিন্ডিকেটসহ স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীর সহযোগিতায় মানুষকে জিম্মি করে তিন থেকে চার গুণ ভাড়া নেয়া হচ্ছে। যাত্রীদের ভিড় দেখে ৩০ টাকার ভাড়া ১শত টাকা নিচ্ছে। কাছাকাছি যাত্রীদের ওঠা নিষেধ করে দিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, প্রতি গাড়ি থেকে ৫শত টাকা করে রেখে, ১শত টাকা জনপ্রতি ভাড়া উঠানো হয়েছে। সেই ৫শত টাকার ভাগ বলা হয়েছে সাংবাদিক এবং পুলিশকে দেয়া হয়। উপজেলার ভবেরচর, জামালদী, ভাটেরচর, বাউশিয়া বাসস্ট্যান্ডে প্রচুর যাত্রী বাসের অপেক্ষায় দাঁডিয়ে আছে। যাত্রীর তুলনায় বাসের সংখ্যা কম। অধিকাংশ যাত্রীই কুমিল্লা থেকে ছেড়ে আসা লোকাল বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত, এ সুযোগে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
এ বিষয়ে ঢাকার মিরপুরে যাবে আমান উল্লাহ বলেন, ৫ দিন ছুটি পেয়েছিলাম, আগামীকালই (রবিবার) অফিসে যোগদান করতে হবে। কিন্তু রাস্তায় বাসের সংখ্যা কম প্রায় তিন ঘন্টা যাবৎ পরিবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও সিট পাচ্ছি না। জাহিদ হোসেন নামে আরেক যাত্রী বলেন, ভাই গাজীপুর যাব, কিভাবে যাব তা বুঝে আসছে না, ঈদ আনন্দ পুরো মাটি হয়ে যাচ্ছে।
দূরপাল্লার বাসই শুধু নয়, স্থানীয় মিনিবাসগুলোতে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। সেজন্য অনেক বাসেই হেল্পারদের সাথে যাত্রীদের তর্কাতর্কি, হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি দেখার কেউ নাই।
দাউদকান্দি হাইওয়ে মিনিবাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এবং আর এম ট্রান্সপোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রধান রাসেল জানান, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার কোন নীতিমালা নেই। অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে এই বিষয়টি অবগত নেই এবং কাছাকাছি যাত্রীদের উঠা নিষেধ বিষয়টিও জানা নেই। স্টাফদের সাথে কথা বলে বিষয়টি জানানো হবে। তিনি আরও জানান, শ্রমিক লীগের এক নেতা লোক দিয়ে ভবেরচর স্ট্যান্ডে চাঁদা উঠায়। শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জানান, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া ঠিক না। অতিরিক্ত টাকা উঠানোর সাথে আমার লোক জড়িত নেই। যাত্রী প্রতি ১শত টাকা করে উঠানো হয়েছে। কেবল আরএম ট্রান্সপোর্ট ও প্রধান এক্সপ্রেস গাড়িতে সেখানে আমার কোনো লোক নেই।
এ বিষয়ে ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুজ্জামান বলেন, ঈদের কারণে তারা মনে হয় ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।