নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দিকে তাকিয়ে আছে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এই বড় দুটি বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত ভর্তিতে অংশগ্রহণ করলে তারা আসতে সম্মতি জানিয়েছেন। তবে জাতীর স্বার্থে সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার আওতায় আসতে হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ইউজিসিতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক বৈঠকে এসব বিষয় উঠে এসেছে।
সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, চট্টগ্রাম প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম শেখ এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মহিউদ্দিন আহমাদ উপস্থিত ছিলেন।
চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ইউজিসির সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানাই। বুয়েট যদি পাশে থাকে তবে গুচ্ছপদ্ধতিকে আমরা এগিয়ে নেব, তবে বুয়েট অংশগ্রহণ না করলে চুয়েট থাকবে না। রুয়েট উপাচার্য ড. মো. রফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, বুয়েট হচ্ছে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান, তারা আমাদের আদর্শ, তাই বুয়েটকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত বা গুচ্ছপদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা চাই ইউজিসির আহ্বানে বুয়েট এগিয়ে আসবে, নতুবা এটি বাস্তবায়ন করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।
কুয়েট উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমাদ বলেন, সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে, তবে বড় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় না এলে এ কার্যক্রমে যুক্ত হতে আমাদের নানা ধরনের বাধার মুখে পড়তে হবে।
এ প্রসঙ্গে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেছেন, সকল স্থান থেকে আমরা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি, এ বিষয়ে কিছু চাপও রয়েছে, এতে কিছু আসে যায় না। অভিভাবক ও নারী শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেব। কারও ইগো যেন অন্যদের প্রভাবিত করতে না পারে সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ইউরোপ ও ভারতে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে, আমরা কেন সেটি বাস্তবায়ন করতে পারব না? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে না। তাদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য অন্যদের ভোগান্তি হবে তা মেনে নেয়া হবে না। আমরা জাতির স্বার্থে যেকোনো মূল্যে সমন্বিত ভর্তি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করব।
তিনি আরও বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা চালু ও সান্ধ্যকোর্স বন্ধে আপনারা (উপাচার্য) এগিয়ে এলে শিক্ষক সম্প্রদায়ের ভাবমূর্তি ইতিবাচক পরিবর্তন হবে বলে আমি মনে করি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ইউজিসিতে আয়োজিত ওই সভায় দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উপস্থিত ছিলেন।