নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপচে পড়া ভিড়, বেড পাচ্ছে না রোগীরা। বেড না পেয়ে বাধ্য হয়ে ফ্লোরিং করছেন রোগীরা। এতে ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
গতকাল সোমবার টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র তাপদাহে অসুস্থ রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। বাধ্য হয়েই অস্বস্তিকর পরিবেশে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে মা, শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতীসহ বিভিন্ন রোগীদের। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯৪ জন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, ৫০ সিট বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫০ এর ঊর্ধ্বে হওয়ায় ভীষণ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই। কোথায় যাব আমরা? বাধ্য হয়েই অস্বস্তিকর পরিবেশে সেবা নিতে হচ্ছে আমাদের। অপরদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শৌচাগারগুলোর অবস্থা নাজেহাল হয়ে পড়েছে। কোন অবস্থাতেই ব্যবহারের যোগ্য নয়। দরজা, জানালার চৌকাঠগুলো যেন বছরেও একটু ধুয়ে মুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারপাশের সীমানায় যেন ময়লার ভাগাড় এবং ঘাস, লতাপাতায় জড়ানো। আবর্জনার ভাগাড় ও ড্রেনগুলো থেকে সন্ধ্যার আগ মুহুর্তেই মশার উপদ্রব শুরু হয়। এতে করে অসুস্থ রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষত মা ও শিশু, বৃদ্ধদের জন্য অনেকটাই হুমকিস্বরূপ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগীদের দাবী, হাসপাতাল ওয়ার্ড কক্ষ ও কেবিনের শৌচাগারগুলো সংস্কারসহ ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট চিকিৎসালয়ের দাবি জানিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে সেবা নিতে আসা রোগীরা স্বস্তি পাবে।
বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায়, পর্যাপ্ত কর্মী সংকটের দরুণ চিকিৎসা সেবাসহ হাসপাতালের পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনকি চলমান তীব্র তাপদাহে রোগীদের সংখ্যা অনবরত বেড়েই চলছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে সেবা নিতে হচ্ছে ১১৪ জনের। পর্যাপ্ত চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তার ও নার্সদের। রোগীদের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ইমার্জেন্সী বিভাগের মেডিকেল অফিসারসহ এসএসিএম ও, ডাক্তার।
জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রকিব হাসান জানান, বেতন না পেয়ে আউটসোর্সিংয়ের বেশকিছু পরিচ্ছন্ন কর্মীসহ কর্মচারীরা পবিত্র ঈদুল ফিতরের কিছুদিন পূর্বে ছুটি নিয়ে চলে গেছে। এখনো পর্যন্ত অনেকেই আসেনি। এমতাবস্থায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের এত চাপ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে আরএমও ডক্টর নূরে আলম সিদ্দিক জানান, এই গ্রীষ্মের সময় তীব্র তাপদাহে সিজনাল রোগ-ব্যাধিসহ ঠান্ডা, জ্বর, কাশি, সর্দি, ডায়রিয়াসহ বুকে ও পেটে ব্যথার রোগীর সংখ্যা অনেকটাই বেশি। ফলে সেবা নিতে আসা রোগীদের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হওয়ায় বাড়তি রোগীদের সেবা দিতে বিঘ্ন ঘটছে।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টি.এস. ড. প্রণয় মান্না দাস জানান, আমরা গতবছর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জন্য চাহিদা দিয়েছি। বাজেট আসলে আশা রাখছি অচিরেই চিকিৎসা সেবায় স্বস্তি ফিরে আসবে।