নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাইয়ার পাড় পদ্মা নদীর চর থেকে তুলে কামারখাড়া বাজারের কামারখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান খুকু হালদারের অফিসে এনে এক যুবককে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রেমসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মেয়েপক্ষের অভিভাবক চেয়ারম্যানের সহায়তায় ওই যুবককে মারধরের পর তার কাছ থেকে জোর করে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে ওই যুবককে তাদের অভিভাবকের হাতে তুলে দেয় বলে ভুক্তভোগী পরিবারটি জানায়। এসময় ওই যুবকের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী যুবক খোকন হাওলাদার বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ আদালতে এজাহার দায়ের করেছে। মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত: ৪ এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইফতি হাসান ইমরান মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিতে তদন্ত দিয়েছেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের পেশকার সারোয়ার হোসেন। ভুক্তভোগী খোকন ছোট কেওয়ার গ্রামের বিল্লাল হাওলাদারের ছেলে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী খোকন হাওলাদার বলেন, আমি ঈদের ছুটিতে গত রবিবার হাইয়ার পাড় পদ্মা নদীর চরে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাই। রাত ৭টার দিকে কামারখাড়া গ্রামের রাজিব মোল্লা (২৫), মনির হোসেন মোল্লা (৫২), সহিদ ছৈয়াল (৩৫), বিপ্লব (২৫) আমার উপর কাঠের ডাঁসা, লোহার রড, চাকু নিয়ে হামলা করে। পরে হাইয়ার পাড় নদীর পাড় হতে আমাকে মারতে মারতে কামারখাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান খুকু হাওলাদারের অফিসে নিয়ে আসে। এসময় চেয়ারম্যান ইশারা দিয়ে আমাকে মারতে বলে বাহিরে চলে গেলে আসামীরা আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এসময় তারা আমার পায়ের রগ কেটে হত্যার চেষ্টা করে। আমার গলায় ছুরি ধরে রেখে আমার কাছ হতে জোর করে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। পরে আমাকে আমার অভিভাবকদের হাতে তুলে দিলে আমার অভিভাবকেরা আমাকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেয়। আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী খোকনের বড় ভাই ঝন্টু হাওলাদার বলেন, আমার ভাইকে ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রেখে আমাদের স্থানীয় মেম্বার আয়েশা বেগমের কাছে খবর দেয় চেয়ারম্যান। আয়েশা বেগম বিষয়টি আমাদের অবহিত করলে আমরা প্রথমে আয়েশা বেগমের কাছে যাই। পরে আয়েশা মেম্বার ও সাবেক কালনী মেম্বারকে সাথে নিয়ে আমরা চেয়ারম্যানের অফিসে যাই। গিয়ে দেখি আমার ভাইকে মারধর করে ওরা বসিয়ে রেখেছে। এসময় রাজিবের বাবা মনির হোসেন মোল্লা আমার মাকে বলে, তোমার ছেলে আমার মেয়ের সাথে প্রেম করে বিচার দিলাম তোমরা তো বিচার করতে পারলা না আমরা বিচার কইরা দিলাম বলে আমার মাকে অপমান করে। পরে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আমাদের কাছ হতে জোর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে আমার ভাইকে আমাদের হাতে তুলে দেয় চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মনির হোসেন বলেন, খোকন আমার ভাইগ্না। আমি খোকনের মা-বাবাকে আগেই সতর্ক করেছি আমি আত্মীয়ের সাথে আত্মীয়তা করবো না।
টঙ্গীবাড়ীতে যুবককে ইউপি চেয়ারম্যানের অফিসে আটকে মারধর, আদালতে মামলা
আগের পোস্ট