নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সরকারি শৌচাগার দখল করে দলিল লেখকের চেম্বার নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি অর্থায়নে নির্মিত শৌচাগারে দলিল লেখক জাকির মাদবর ও তার ছেলে মাহমুদুল হাসান তাদের মক্কেল নিয়ে কাজ করছে। এদিকে, উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে সেবা নিতে আসা লোকজন শৌচাগার না থাকায় পড়েছেন বিপাকে।
জানা গেছে, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়টি একসময় উপজেলার আদালতের কার্যালয় ও জেলখানা ছিল। সেই সময়ে তৈরি হয়েছিল এই শৌচাগারটি। পুরাতন শৌচাগারের লোহার দরজাসহ বিভিন্ন মালামাল দলিল লেখক জাকির মাদবর ও তার ছেলে মাহমুদুল হাসান নিলাম ছাড়া বিক্রি করে দেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে তারা সরকারি ভবনের ডিজাইন পরিবর্তন করে নিজের ব্যক্তিগত কাজের জন্য শৌচাগার ভিতর ভেঙ্গে তৈরি করেছেন দলিল লেখক চেম্বার। এছাড়াও এই দুই দলিল লেখক বাবা/ছেলের নামে জাল দলিল তৈরি করার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে দলিল লেখক বাবা জাকির মাদবর এক সময় টঙ্গীবাড়ী বাজারে ঘুরে ঘুরে কখনো বা ফুটপাতে বসে গামছা ও মাছ ধরার জালি বিক্রি করতো। তার নেই কোন একাডেমি সনদ। তারপরেও সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত দলিল লেখক দাবি করে অন্যের সাইনবোর্ডের পাশে নিজের সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত দলিল লেখক লিখে। অন্যকে দিয়ে দলিল লিখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। নিজের ব্যক্তিগত ভিজিটিং কার্ডে লিখেছেন নামজারি জমা ভাগ করিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তিনি ভূমি অফিসের কেউ নন। ভূয়া দলিল লেখক আর ভূমি অফিসের নামজারি বাণিজ্য করে গড়েছেন অগাধ অর্থ। তার ছেলে মাহমুদুল হাসান সরকারি দলিল লেখক হলেও বাবার অবৈধ আয় দেখে নিজে নেমেছেন অবৈধ আয়ে। অবৈধ ও ভুয়া জাল দলিল তৈরি করায় এর আগেও মাহমুদুলের নামে আদালতে মামলা হলে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ইং বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মাহমুদুল হাসানকে টঙ্গীবাড়ী সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে হতে গ্রেফতার করে সেসময়ের টঙ্গীবাড়ী থানার এস আই নুরে আলম মিয়া। এদিকে শৌচাগার দখল করে ব্যক্তিগত চেম্বার নির্মাণ করায় জরুরী কাজে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে আসা ব্যক্তিরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাহামুদুল হাসান বলেন, তিনি এ শৌচাগার দখলের বিষয়ে জানেন না। তার পিতা জাকির মাদবর জানেন।
এ বিষয়ে জাকির মাদবর জানান, সরকারি শৌচাগারটি পরিত্যক্ত থাকায় সেখানে তিনি দলিল লেখকের চেম্বার করেছেন।
উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। কীভাবে তিনি সেখানে চেম্বার তৈরি করেছে তা আমি জানি না। তবে সরকারি শৌচাগার দখল করে দলিল লেখক চেম্বার করা তার ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার স্বপন কুমার দে বলেন, এটা সরকারি সম্পত্তি, দেখার দায়িত্ব উপজেলার। বিষয়টি নিয়ে আমাকে বলে লাভ কি?
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রাসেদুজ্জামান বলেন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ওখানে কে বা কারা শৌচাগার দখল করে চেম্বার করছে বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবো।