নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, বিএনপি-জামাত অশুভ জোট বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক গণতান্ত্রিক চেতনা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায়। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তস্নাত বাংলার রাজপথে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির কোনো ঠাঁই নেই।
গত ১৮ ডিসেম্বর রবিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপির সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতা এস কে শিকদার, ডা. শাহাদাত হোসেন, ডা. অসিত বরণ রায়, কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, ইসমাইল হোসেন, আবু আহমেদ মন্নাফী, বজলুর রহমান প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির গৌরব, মর্যাদা, বিজয়, বিসর্জন, আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও বীরত্বের আখরে লেখা এক মহাকাব্য। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অব্যাহত ও ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমেই পরিপূর্ণ জাতীয়তাবাদী চেতনায় পরিপুষ্ট হয়ে উঠেছিল বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মধ্যে স্বাধীনতা অর্জনের সুতীব্র আকাক্সক্ষার পরিপূর্ণ পরিস্ফুটন ঘটিয়েছিলেন। বাঙালি জাতিকে মুক্তির জন্য চূড়ান্ত আত্মত্যাগে প্রতীজ্ঞ জাতিতে রূপান্তরিত করেছিলেন। বাঙালি হৃদয়ে দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়, অদম্য স্পৃহা ও বীরত্বের অমিত শক্তি সঞ্চারিত করে স্বাধীনতা সংগ্রামকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ নির্মাণের আদর্শ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ভাবাদর্শগত ভিত্তি রচনা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মহান আদর্শ এবং তার সোনার বাংলার বিনির্মাণের স্বপ্নই ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান ইশতেহার।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নসাধ বাস্তবায়নে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে ঠিক তখন পরাজিত অপশক্তি ও তাদের জোট বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বিএনপি-জামাত অশুভ জোট ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বর্বর-নারকীয়-কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করেছিল বাংলাদেশের সবুজ জমিন, অগ্নিদগ্ধ করেছিল বিস্তীর্ণ জনপদ। শত শত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। সেই আগুন সন্ত্রাসীরা আবরও গণতন্ত্রের নামেÑ আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস, অরাজকতা, নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামাত অশুভ জোট বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক গণতান্ত্রিক চেতনা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায়। স্বৈরশাসনের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপিকে কোনো ছাড় নয়। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারী খুনিদের দল বিএনপি-জামাতকে বহু ছাড় দেওয়া হয়েছে। আর নয়। যেখানেই সন্ত্রাস সেখানেই প্রতিরোধ। যেখানেই নৈরাজ্য সেখানেই প্রতিহত। যেখানেই নাশকতা সেখানেই প্রতিঘাত। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তস্নাত বাংলার রাজপথে তাদের ঠাঁই নেই, হবে না।