নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশবাসীকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য সচেতন হতে আবারো আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এক সেকেন্ডের অবহেলা, হাত ধোয়ায় ২০ সেকেন্ডের অলসতা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। করোনা প্রতিরোধের সেরা উপায়, নিজেকে নিজের সুরক্ষা দেয়া। সোমবার সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার নতুন করে করোনার উচ্চ ঝুঁকি বিবেচনায় বেশকিছু জেলা ও সিটি করপোরেশনের সুনির্দিষ্ট এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এসকল এলাকায় সর্বসাধারণকে কঠোরভাবে সরকারি নির্দেশনা প্রতি পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। অনুরোধ করছি ধৈর্য্যরে সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলার। সরকার নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও টেস্টিং ক্যাপাসিটি এবং চিকিৎসার সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে ৬০টির অধিক কেন্দ্রে টেস্ট করা হচ্ছে যদিও আমাদের আরও টেস্ট সেন্টার বাড়ানো প্রয়োজন। ইতোমধ্যে চিকিৎসা সরঞ্জাম, সুরক্ষা সামগ্রীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যত প্রস্তুতিই নেয়া হোক না কেন বিশ্বব্যাপী আজ একটি অভিন্ন কথাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন- সেটি হলো নিজের সুরক্ষা। করোনা প্রতিরোধের সবচেয়ে সেরা কৌশল হিসেবে নিজেকে সচেতন রাখতে হবে, সুরক্ষা দিতে হবে। তাই আসুন কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে আমরা সুরক্ষার প্রাচীর গড়ে তুলি, নির্মাণ করি সচেতনতা দুর্গ।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশ সফররত চীনা বিশেষজ্ঞ দলটি সরকারের নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীর দায়িত্ব পালনের প্রশংসা করেছেন। নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে তারা মত প্রকাশ করার পাশাপাশি জনগণের সচেতনতার অভাবের কথা বলেছেন। আমি আবারো সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। মনে রাখবেন, এক সেকেন্ডের অবহেলা, হাত ধোয়ার ২০ সেকেন্ডের অলসতা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, লক্ষণ দেখা দিলে গোপন করবেন না। নিকটস্থ কেন্দ্রে পরীক্ষা করান। অনেকে লক্ষণ গোপন করে স্বাভাবিক চলাফেরার কারণে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। দয়া করে সবার স্বার্থে ঝুঁকি নেবেন না। অনেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাওয়া প্রেসক্রিপশন ফলো করে ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। প্রয়োজনে হটলাইনে যোগাযোগ করুন, টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করুন। অযথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসা ফলো করবেন না। আপনার সমস্যা অন্যের সাথে নাও মিলতে পারে এতে আপনি ঝুঁকিতে পড়বেন। এসময় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নোয়াখালীতে স্থাপিত কোভিড হাসপাতালের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে দুটি আইসিইউ ভেন্টিলেটর হস্তান্তর করেন। মন্ত্রীর সংসদ ভবনের বাসভবনে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ তা গ্রহণ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার সারা দেশের বিশেষ করে জেলা পর্যায়ে হাসপাতালে আইসিইউ সহ জরুরি সেবা সম্প্রসারণ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের পাশাপাশি এ সংকটকালে বেসরকারি উদ্যোগও যোগ করতে পারে নতুন মাত্রা। সামর্থ্যবানরা যেভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেভাবে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পারেন। তিনি বলেন, নোয়াখালীতে কোভিড হাসপাতালটির শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ সিস্টেম। এছাড়া সদর হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা চলছে। এর আওতা ইতোমধ্যে বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে। আমি জেলার অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সামর্থ্যবানদের সাধ্যমত মানবিক প্রয়াসে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।