নিজস্ব প্রতিবেদক
পুষ্টিগুণে ভরা কচি তালের শাঁস এখন সস্তায় বিকিকিনি হচ্ছে। গ্রীষ্মকালীন তাল নামক ফলটি মানুষের খাবার হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকে। এ মৌসুমে অন্যান্য ফলের তালিকার পাশাপশি পাকা তাল ও কাঁচা কচি তালের শাঁস ছোট বড় সকলের কাছে অতি প্রিয় একটি খাবার। তবে এই সময়ে কচি তালের শাঁসের কদর বেশী। দেশের বিভিন্ন হাট বাজার, রাস্তাঘাটের ফুটপাত ও মহল্লার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হয় তালের শাঁস। প্রতিটি কচি তালের শাঁস বিক্রি হয় ৪-৬ টাকায়। যদিও আকার অনুসারে এর দাম কম বেশী হয়ে থাকে। ধনী ও গরীবের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে সকলের কাছে লোভনীয় এই খাবারটি। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের পছন্দের কচি তালগুলো কেটে শাঁস বের করে দেয় দোকানিরা। এছাড়া তালের শাঁস মানবদেহের জন্যও বেশ উপকারী একটি খাবার।
স্থানীয় বাজারে শাঁস কিনতে আসা মোঃ আলম মিয়া (৫৫) বলেন, দোকানি তাল কাটায় এখন ব্যস্ত। তাই লাইনে থাকা ২ জনের পরে আমার সিরিয়াল। তালের শাঁস নিতেই অপেক্ষা করছি। শিশু ক্রেতা আবিব (৮) ও সামি (৯) বলেন, তারাও কচি তালের শাঁস কিনতে অপেক্ষা করছেন। রোজ বিকালে তালের শাঁস নিতে আসেন তারা। শাঁস বিক্রেতা মোঃ মঈন শেখ (৪৫) বলেন, তিনি প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে কচি তালের শাঁস বিক্রি করেন। স্থানীয়ভাবেও মাওয়া ঘাটসহ ফরিদপুর থেকে পাইকারীতে কাঁচা তাল সংগ্রহ করেন তিনি। স্থানীয় বাজারে ও রাস্তার মোড়ে তা খুচরা বিক্রি করেন। ১০০টি হিসাব অনুযায়ী কাঁচা তালের বাধি পাইকারী দামে ১০০০-১২০০ টাকায় ক্রয় করছেন তিনি। প্রায় মাস ব্যাপী শাঁস বিক্রি করে তার আয় ভালোই হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ এসএম রাশেদুল হাসান রাশেদ এ বিষয়ে বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম কচি তালের শাঁসে রয়েছে ৮৭ কিলোফ্যানারি, ৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৮৭.৬ গ্রাম পানি, ০.৮ গ্রাম আমিষ, ০.১ গ্রাম ফ্যাট, ১০.৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রোটস, ১ গ্রাম খাদ্যআঁশ, ২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ১ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.০৪ গ্রাম থায়ামিন, ০.০২ মিলিগ্রাম রিবোফাভিন, ০.৩ শিলিগ্রাম নিয়াসিন ও ৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন। তালের শাঁস শরীরের পানি শূন্যতা দূর করে। শাঁসে বিদ্যমান ভিটামিন সি ও বি কমপ্লেক্স রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি লিভারের সমস্যা, রক্তশূণ্যতা দূরীকরণসহ মানুষের ত্বকের যত্নেও বেশ উপকারী। এ সময়টাতে প্রচুর পরিমাণে কচি তালের শাঁস খাওয়ার পরার্মশ দেন এই চিকিৎসক।