নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, বাংলা, বাঙালি, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অবিচ্ছেদ্য অংশ; শেখ মুজিব মানেই বাংলাদেশ। তিনি চিরন্তন- চিরঞ্জীব; স্বাধীনতা ও মুক্তির মূর্ত প্রতীক।
গতকাল ৩১ আগস্ট বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবসের মাসব্যাপী কর্মসূচির সমাপনী দিনে মুন্সীগঞ্জ শহরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এক শোক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এরপর সমাবেশ থেকে শোক র্যালি মুন্সীগঞ্জ শহর প্রদক্ষিণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং শপথ বাক্য পাঠ করা হয়। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, মুন্সীগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দিন কল্লোল, জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক মোর্শেদা আক্তার লিপি, জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক আবুল কাশেম, পৌর কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, গজারিয়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু, মোঃ হাফিজুজ্জামান খান জিতু, ইঞ্জিনিয়ার সাহিদ মোঃ লিটন প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, বাংলা, বাঙালি, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। শেখ মুজিব মানেই বাংলাদেশ। বাঙালি জাতির চেতনার ধমনীতে প্রবাহিত শুদ্ধতম নাম শেখ মুজিব। তিনি চিরন্তন- চিরঞ্জীব; স্বাধীনতা ও মুক্তির মূর্ত প্রতীক, বাঙালির কণ্ঠে উচ্চারিত শব্দের প্রাণশক্তিÑ প্রত্যেকটি বর্ণমালার জাগরণী চেতনা। তিনি বাঙালি জাতির স্বাধীনতা নামক মহাকাব্যের মহানায়ক, পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তির মহান পথ প্রদর্শক, আবহমান বাংলা ও বাঙালির হাজার বছরের আরাধ্য পুরুষ। তিনি বাঙালির অসীম সাহসিকতার প্রতীকÑ সমগ্র বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বীর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু পৃথিবীর যেখানেই গেছেন সেখানেই বিশ^নেতৃবৃন্দের মাঝে শত নক্ষত্রের মধ্যে সব চেয়ে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র হয়ে উঠেছিলেন। তিনি যখন ওআইসি, জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন, বিশ^শান্তি পরিষদ, কমনওয়েলথসহ বিশ^সভায় উপস্থিত হতেন ইতিহাস খ্যাত তৎকালীন সময়ের রিচার্ড নিক্সন, লিওনিফ ব্রেজনেভ, ফিদল কাস্ত্রে, ইন্দিরা গান্ধি, আনোয়ার সাদাত, ইয়াসির আরাফাত, বাদশা ফয়সাল, হুয়ারি বুমেদিন, এডওয়ার্ড হিথ, হ্যারল্ড উইলসন, নিকোলাই পদগোর্নি, উইলি ব্রান্ট, মার্শাল টিটো’র মতো বিশ^নেতৃবৃন্দের মাঝে বঙ্গবন্ধু তার প্রজ্ঞা তেজদীপ্ত নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্বের আলোকজ্জ্বল আভায় আসরের মধ্যমণি হয়ে উঠতেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর স্বাধীন বাংলাদেশে সামরিক-স্বৈরাচার তিন দশক ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে ভুল ইতিহাস শেখাবার অপচেষ্টা চালায়। খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ চির অনির্বাণ হয়ে প্রজ্জ্বলিত থেকেছে প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে। বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতির অবিভাজ্য সম্পর্কের কোন পরিসমাপ্তি নেই। বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু সাম্য, মৈত্রী, গণতন্ত্রসহ বিশ^শান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন বিশে^র নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির দূতÑ স্বাধীনতা ও শান্তির প্রতীক। বাংলা ও বাঙালি যতদিন থাকবে, এই পৃথিবী যতদিন থাকবে, পৃথিবীর ইতিহাস যতদিন থাকবে তিনি একইভাবে প্রজ্জ্বলিত হবেন প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে, প্রতিটি মুক্তিকামী, শান্তিকামী, মানবতাবাদী হৃদয়ে। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন চিরকাল বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করবেÑ পথ দেখাবে।