নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, এদেশে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের প্রধান সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগ। বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে জাতীয় শ্রমিক লীগ। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে নেতৃত্ব দিয়েছে জাতীয় শ্রমিক লীগ। অবহেলিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত, অধিকার বঞ্চিত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম অব্যাহত চালিয়ে যাচ্ছে শ্রমিক লীগ।
গতকাল বুধবার জাতীয় শ্রমিক লীগের ৫৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ জাতীয় শ্রমিক লীগ শিল্পায়ন আঞ্চলিক শাখা আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব উদ্দিন কল্লোল, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি মহাসীন মাখন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আল-মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. গোলাম মাওলা তপন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আসাদুজ্জামান সুমন, জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়িকা মোরশেদা বেগম লিপি, কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, আরিফুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আপন দাস। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় শ্রমিক লীগ মুন্সীগঞ্জ শিল্পায়ন আঞ্চলিক শাখার সভাপতি আবুল কাশেম। সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ সালমান খান।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ একে অপরের উপর নির্ভরশীল। এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতা থেকেই সৃষ্টি হয়েছে বিনিময়। আর এ নির্ভরশীলতা থেকেই সৃষ্টি হয় পারিশ্রমিকের প্রশ্ন। সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে মানবসমাজের চাহিদাপূরণে বাস্তবায়িত হয়েছে বহুকৌণিক উৎপাদনমুখী পদক্ষেপ। সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে শ্রমজীবী জনগোষ্ঠী। হাজার হাজার বছর ধরে যে শ্রমজীবী মানুষের রক্ত-ঘামে মানবসভ্যতার উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে। অথচ এই শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীই থেকেছে উপেক্ষিত। অধিকার আদায়ে সৃষ্টি হয়েছে শ্রমিক সংগঠনের। আজকের আধুনিক উন্নত-সমৃদ্ধ পৃথিবীর কারিগর এসব অবহেলিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত, অধিকার বঞ্চিত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে অব্যাহত রয়েছে শ্রমিক সংগঠনের নিরন্তর সংগ্রাম। এদেশে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অগ্রপথিক হলো জাতীয় শ্রমিক লীগ।
তিনি বলেন, শুধু শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ই নয়Ñ বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রামে বাংলাদেশের শ্রমিক শ্রেণী অনন্য সাধারণ রক্তঝরা গৌরবোজ্জ্বল বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। আদমজী, টঙ্গী, খালিশপুর, তেজগাঁওসহ শিল্প এলাকা হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশের সকল স্থানে শ্রমিকসমাজ বাঙালির সকল মহতী সংগ্রামে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে নেতৃত্ব দিয়েছে জাতীয় শ্রমিক লীগ।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মে দিবসের চেতনা ‘বৈষম্যহীন’ সমাজ গড়ার যে প্রত্যয় ধারণ করেছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় ও বিশ্ব বাস্তবতা পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে চেতনা বহন করে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দলটি। বঙ্গবন্ধু কন্যার দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য উন্নয়নের রোল মডেল। অগ্রযাত্রার এ ধারা অব্যাহত রেখে আমরা সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। এর মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জাতির এ লক্ষ্য অর্জনে কৃষক, শ্রমিক, মেহনতী মানুষসহ সকল শ্রমজীবীকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।