নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তি ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করতে হবে। এই অপশক্তিই বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির পথে প্রধান অন্তরায়। তাই এই অপশক্তিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে হবে।
গতকাল বুধবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপস্থিত নেতাকর্মী ও জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দানকালে এ কথা বলেন তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষক লীগের সভাপতি মহাসীন মাখন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা তপন, পৌর কাউন্সিলর নার্গিস আক্তার, দ্বীন ইসলাম, রহিম বাদশা, আওলাদ হোসেন, সোহেল মিয়া, আক্তার চৌধুরী, মুন্সীগঞ্জ আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি আবুল কাশেম প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক মর্মবেদনার দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস ঘাতকরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতার সংগ্রামে দেশমাতৃকার এই শ্রেষ্ঠ সন্তানরা নিজ কর্মের মাধ্যমে প্রেরণা জুগিয়েছিলেন। বাঙালি জাতিকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বাঙালি জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করে মুক্তিকামী জনগণকে উদ্দীপ্ত করেছিলেন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে। বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের আপসহীন ভূমিকা পাকিস্তানি শাসকদের ক্ষুব্ধ করেছিল। তাই যুদ্ধের শুরু থেকেই পাকিস্তানি বাহিনী বাছাই করে করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে থাকে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি ঘাতকদের আত্মসমর্পণের ঠিক দুইদিন আগে ১৪ ডিসেম্বরের বীভৎস- নারকীয়- পাশবিক হত্যাকান্ডের কোন তুলনাই হয় না। ১৪ই ডিসেম্বরের হত্যাকান্ড ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে এক জঘন্য বর্বর ঘটনা, যা বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষকে স্তম্ভিত করেছিল। পৃথিবীর কোনো যুদ্ধেই শিল্পী, সাহিত্যিক, জ্ঞানী-গুণী, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার নজির নেই। একসাথে এত বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা এর আগে আর ঘটেনি। পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। ঘাতক-দালাল চক্র এই পৈশাচিক-নির্মম নিধন যজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রেখে যায়।
তিনি আরও বলেন, একাত্তরের সেই রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর রাজনৈতিক সংগঠন ও তাদের জোট এখনও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বিরোধী নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তি ও তাদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপি-জামাতকে অশুভ জোটকে রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করতে হবে। এই অপশক্তিই বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির পথে প্রধান অন্তরায়। তাই এই অপশক্তিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে হবে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তি ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করতে হবে – অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস এমপি
আগের পোস্ট