নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন-সাধ বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যেতে হবে। আসুন সকলে ঐতিহাসিক মুজিবনগর সরকার দিবসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ বাস্তবায়নের শপথ গ্রহণ করি।
গতকাল ১৭ এপ্রিল রোববার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুরুল আলম, মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মীর নাসির উদ্দিন উজ্জ্বল প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদির।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। এই সরকার গঠনের সাথে সাথে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ প্রবল যুদ্ধে রূপ নেয় এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়।
তিনি বলেন, ১৭ই এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সুদীর্ঘ ইতিহাসে চিরভাস্বর এক অবিস্মরণীয় দিন। স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সর্বস্তরের জনগণ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে মুজিবনগর সরকার তথা বাংলাদেশের প্রথম সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এম মনসুর আলী, স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষিমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান, মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল সংগঠক, মুজিবনগর সরকারের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লক্ষ শহীদ, নির্যাতিত দুই লক্ষ মা-বোন এবং মহান মুক্তির সংগ্রামে আত্মনিবেদনকারী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে সংগঠিত স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ-পরিক্রমায় এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মুজিবনগর সরকারের অধীনে পরিচালিত দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের।