নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ নির্মাণ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
গতকাল ১৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ শহরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন তিনি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. গোলাম মাওলা তপন, জেলা কৃষক লীগ সভাপতি শেখ মনিরুজ্জামান রিপন, পৌর কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক আবুল কাশেম, যুবলীগ নেতা জাহিদ হাসান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম পলাশ প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক মর্মবেদনার দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস ঘাতকরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতার সংগ্রামে দেশমাতৃকার এই শ্রেষ্ঠ সন্তানরা নিজ কর্মের মাধ্যমে প্রেরণা জুগিয়েছিলেন। বাঙালি জাতিকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বাঙালি জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করে মুক্তিকামী জনগণকে উদ্দীপ্ত করেছিলেন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে।
তিনি আরও বলেন, মেধাবী সন্তানরা একটি জাতির প্রধান সম্পদ। কোন জাতির অগ্রসরমানতা বা সার্বিক বিকাশের ধারা নির্ণিত হতে থাকে তার মেধাবী সন্তানদের কর্মপ্রয়াসের ভিত্তিতে। তাই পাকিস্তানি হানাদাররা বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করে পঙ্গু করে ফেলার এক ভয়াবহ নীল নকশার পরিকল্পনা করে। পাকিস্তানি ঘাতকদের আত্মসমর্পণের ঠিক দুইদিন আগে ১৪ ডিসেম্বরের বীভৎস নারকীয় পাশবিক হত্যাকান্ডের কোন তুলনাই হয় না। ১৪ই ডিসেম্বরের হত্যাকান্ড ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে এক জঘন্য বর্বর ঘটনা, যা বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষকে স্তম্ভিত করেছিল। পৃথিবীর কোনো যুদ্ধেই শিল্পী, সাহিত্যিক, জ্ঞানী-গুণী, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার নজির নেই। একসাথে এত বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা এর আগে আর ঘটেনি।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের সুমহান মুক্তিযুদ্ধে যারা আমাদের দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, যারা ৩০ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করেছিল, পাক হানাদার বাহিনীর হাতে আমাদের মা-বোনদের তুলে দিয়েছিল, ধর্ষণ করেছিল, অগ্নিসংযোগ করেছিল, লুটতরাজ করেছিল, জ্বালাও-পোড়াও করে দেশটাকে সরকার করেছিল, পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করে আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করেছিল সেই সকল মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, নরঘাতকদের ক্ষমা নেই।
তিনি আরও বলেন, বুদ্ধিজীবী দিবসে আমাদের সকলের অঙ্গীকার হোক জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, বহুতত্ত্ববাদী গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ নির্মাণ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।