নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসাপাতালের ৫০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টারে এখন পর্যন্ত ২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। এই ২ জনসহ আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি হওয়া রোগীদের সেবায় কাজ করবে ডাক্তার-নার্সদের ৩টি টিম। আর প্রতিটি টিমে ৪ জন করে ডাক্তার ও ৪ জন নার্স থাকবে। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল কালাম আজাদ দৈনিক মুন্সীগঞ্জের কাগজকে এ তথ্য জানিয়েছে।
সিভিল সার্জন জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য ঢাকায় নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় মুন্সীগঞ্জ থেকে রোগী পাঠাতে বারণ করা হয়ছে জেলা সিভিল সার্জন অফিসকে। তাই গুরুতর না হলে তাদের মুন্সীগঞ্জ আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। গত ২৩ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত ২ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। তারা ২ জনই সদর উপজেলার। রোগীদের সেবার জন্য ৪ জন ডাক্তার ও ৪ জন নার্সের সমন্বয়ে মোট ৩টি টিম গঠন করা হয়েছে । মোট ১২ জন ডাক্তার ও ১২ জন নার্স আপাতত কাজ করবে। প্রতিটি টিম ১০ দিন করে চিকিৎসা সেবায় থাকবে এবং এরপরে তারা নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকবে। আগামী একমাস এভাবে আইসোলেশনের কার্যক্রম চলবে। রোগীর সংখ্যা বাড়লে চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে ।
তিনি আরো জানান, অক্সিজেনের ৫০টি সিলেন্ডার রাখা হয়েছে। আপাতত ১টি এম্বুলেন্স আলাদা রাখা হয়েছে গুরুতর রোগীকে ঢাকা প্রেরণ করার জন্য। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলায় ৫টি আইসোলেশনে ৫টি করে বেড রয়েছে।
এদিকে জেলা আইসোলেশন সেন্টারে এখনো আইসিইউ ও ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা নেই বলে জানান তিনি। সিভিল সার্জন জানান, দেশের কোন আইসোলেশন সেন্টারেই আইসিইউ নেই। তবে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, রোগীকে বাড়িতেও রাখা যায় যদি সমাজ এবং মানুষ সবাই সচেতন হয়। যে রোগীদের উপসর্গ নাই, ধরা পড়লেও সে বাড়িতে থাকতে পারবে এবং বাড়িতে রোগী ধরা পড়লে তখন অন্যরা এমনিতেই সতর্ক হয়ে তার কাছে যাবে না। বাড়িতে থাকলে তাদের একটা সেবা যত্নের সুযোগ সুবিধা থাকে। যেমন- দরজার ভেতর দিয়ে গরম পানি দিলো, ভাল খাবার দিলো। আর যাদের কেয়ার লাগবে যদি শ্বাসকষ্ট হয় সামান্য আক্সিজেন দিলে ভাল হবে তাদের হাসপাতালে রাখতে পারবে।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় অবস্থানে নারায়ণগঞ্জ ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে মুন্সীগঞ্জের আরেক পার্শ্ববর্তী জেলা মাদারীপুর। এ দুই জেলার মাঝখানে মুন্সীগঞ্জ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে মুন্সীগঞ্জের সাধারণ মানুষ। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে দেশের ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোর মধ্যে ৫ম অবস্থানে রয়েছে মুন্সীগঞ্জ।
উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জে প্রথম ২ নারীসহ ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর গতকাল সোমবার ২৩ জনসহ জেলায় এ পর্যন্ত মোট ৬৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৪৮২ জনের ফলাফল এসেছে জেলা সিভিল সার্জন অফিসে। প্রাপ্ত ফলাফলে জেলায় সর্বশেষ গতকাল ১৬ জনসহ মোট ৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত জেলায় মারা গেছে ৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ জন।