নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা চুরির অপবাদে মুরাদ হোসেন রনি (২৬) নামের এক যুবককে হাত-পা বেঁধে মাটিতে ফেলে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আওলাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার মুন্সীগঞ্জ শহরের দক্ষিণ ইসলামপুরে তাকে মারধর করা হয়। আওলাদ হোসেন মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। মারধরের ঘটনায় ওইদিন রাতে ভুক্তভোগী যুবক মুরাদ হোসেন রনি বাদী হয়ে আওলাদ হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অন্য অভিযুক্ত দুইজন হলেন- দক্ষিণ ইসলাম গ্রামের মনির হোসেন ও কালাই হোসেন। মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে সমালোচনা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ ইসলামপুর গ্রামের মনির হোসেনের বাড়ি থেকে ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ২২ হাজার টাকা চুরি হয়। সেই ঘটনায় গত সোমবার সকালে চুরির অপবাদ দিয়ে মনিরের প্রতিবেশি রনিকে বাড়ি থেকে ধরে আনেন কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন, মনির হোসেন ও তার ভাই কালাই। পরে মনিরের বাড়ির উঠানে রনিকে হাত-পা বেঁধে ফেলে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন আওলাদ হোসেন। তবে মারধরের পরও চুরির বিষয়ে অস্বীকার করেন রনি। পরে রনির ছোট ভাই থানা থেকে পুলিশ নিয়ে আসলে রনিকে পুলিশের কাছে তুলে দেন মারধরকারীরা। ভুক্তভোগী রনি বলেন, আমাকে মেরে চুরির কথা স্বীকার করতে বলে। কিন্তু আমি স্বর্ণ, টাকা চুরি করিনি। আমি কেন স্বীকার করবো? আমি বাদী হয়ে কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন, মনির হোসেন ও কালাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চান রনি। মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেন পৌর কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন। তিনি বলেন, তবে আমি রনিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসিনি। মনিরের বাড়িতে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে, সেটি জানতে পেরে আমি সেখানে যাই। আওলাদ হোসেন স্বীকার করেন, মারধরের অধিকার তার নেই। তার ভুল হয়েছে। তিনি অনুতপ্ত। রনি যে চুরি করেছে প্রমাণ পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে কাউন্সিলর বলেন, না, চুরির প্রমাণ পাইনি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, রনির লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার রাতে মামলা রুজু করা হয়েছে। কালাই ও মনিরকে গ্রেপ্তার করে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত পৌর কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে রয়েছে বলেও জানান ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক।