নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় বর্তমানে মাদক ব্যবসা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। মাদকের আগ্রাসী থাবায় ওলট-পালট হয়ে যাচ্ছে মানুষের সাজানো সংসার। অবনতিও হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিবেশের। বেড়েছে চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি।
মাদকাসক্ত হয়ে শুধু শহরে নয়, গ্রামগঞ্জের অনেক যুবকের জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মাদকের মরণ থাবার বিস্তার দিন দিন বেড়েইে চলেছে। শহরের অধিকাংশ পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য মাদকাসক্তে জড়িত। ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা আসক্ত হয়ে অকালে ঝড়ে গেছে অনেকের জীবন। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী, এমনকি ডাক্তারও মাদকাসক্তে লিপ্ত। মাদকাসক্তির কারণে পারিবারিক, সামাজিক অশান্তি ও বিপর্যয় বেড়েছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রভাবশালী একটি সংঘবদ্ধ চক্র। মাদকের বিস্তার ও ব্যাপকতা বেড়ে যাওয়ায় চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনাও বেড়ে গেছে। ছোটখাটো মাদক বিক্রেতাদের ধরা হলেও রাঘব বোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করছে। জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের ৩০-৪০টি পয়েন্টে ফেনসিডিল, হেরোইন, মদ, গাঁজা দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। ফেনসিডিল কুমিল্লার দাউদকান্দি হয়ে গজারিয়া দিয়ে নদীপথে শহরের ইসলামপুর এলাকায় আর ধলেশ্বরী নদীপথে চরমুক্তারপুর হয়ে মিরকাদিম পৌরসভা ও পঞ্চসার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করে। নদীপথের পাশাপাশি সড়কপথেও সহজভাবে মাদক নিয়ে ঢোকার বিভিন্ন পথ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশেই গজারিয়া মাদক প্রবেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। যে কারণে মুন্সীগঞ্জে মাদকের ব্যাপকতা অন্যান্য জেলার চাইতে অনেক বেশি।
জেলা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য বলছে, গত ১ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, টঙ্গীবাড়ী, লৌহজং, সিরাজদিখান ও শ্রীনগর থানায় মাদকসহ ৪২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সাজা প্রদান করে বেশ কয়েকটি। এতে বোঝা যায় মুন্সীগঞ্জ জেলায় মাদকের ভয়াবহতা রয়েছে। হেরোইন আসে ঢাকা থেকে মুক্তারপুর। সেখান থেকে সাধারণত শহরে সাপ্লাই দেয়া হয়।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক বলেন, মাদক বিক্রেতাদের ধরা হলেও নানা তদবির শুরু হয়ে যায়। গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠালে কি হবে কয়েকদিন পর জামিনে বেরিয়ে আবার মাদক বিক্রিতে লেগে যায় নতুন উৎসাহে।
এছাড়াও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্ররা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় চলছে মাদক ব্যবসা। যুবসমাজ আর প্রভাবশালী মহলের মদদের কারণেই নির্মূল হচ্ছে না মাদক ব্যবসা।