নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগে জনবলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বছরের পর বছর এই স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় নানা রকমের অসুবিধা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থা আরো চলতে থাকলে এখানকার স্বাস্থ্যবিভাগে স্বাস্থ্যসেবা যেকোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে আশংকা করছে কেউ কেউ। জনবল সংকটের কারণে বর্তমানে সংকটময় সময় কম স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে কোনভাবে রোস্টার করে শূণ্য পদের একাধিক স্থানে এখানকার দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা স্বাস্থ্যসেবায় কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তারপরেও করোনা ও বন্যার মধ্য দিয়ে চলমান সময়ে এই উপজেলায় উপস্বাস্থ্য কমিউনিটি ক্লিনিকের আওতায় একাধিক বাড়িতে বাড়িতে মা ও শিশুদের সেবা প্রদান করে চলেছেন এখানকার স্বাস্থ্যকর্মীরা। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন রয়েছে। মিরকাদিম পৌরসভা আগে রিকাবিবাজার ইউনিয়ন হিসেবে এ উপজেলায় অর্ন্তভুক্ত ছিলো। সেই হিসাব এখানো বিদ্যমান রয়েছে। রিকাবিবাজার ইউনিয়ন থেকে মিরকাদিম পৌরসভায় রূপান্তরিত হলেও মিরকাদিম পৌরসভার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মা ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর্মী এখনো নিয়োগ না দেয়ায় এর হিসাবনিকাশ এখনো মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার স্বাস্থ্যবিভাগের আওতায় চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে মিরকাদিম পৌরসভা প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেলেও বর্তমানেও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যবিভাগ ঢেলে সাজাতে পারেনি বলে শোনা যাচ্ছে। তবে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভায় এ বিষয়ে নিজস্ব স্বাস্থ্যবিভাগ চালু রয়েছে বলে জানা গেছে। মুন্সীগঞ্জ সদরে স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবা প্রদানের জন্য চলতি হিসাব অনুযায়ী ত্রিশটি ওয়ার্ডে ৬৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু সেখানে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৩১ জন স্বাস্থ্যকর্মী। এর ফলে এখানে অর্ধেকের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীর পদে নানাভাবে শূণ্যতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। পঞ্চসারে ৯ জন স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবর্তে এখানে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী। তা দিয়ে এখানে স্বাস্থ্যসেবা চালানো হচ্ছে। এভাবেই কোন না কোন ইউনিয়নে সংকট রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যকর্মীর। এখানে ১১ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও ৪ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক দিয়ে এ উপজেলার কাজ স্বাস্থ্যসেবায় কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম বলে অনেকেই মনে করছেন। এখানে কোঠা অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর্মীর অনেক সংকট থাকা সত্ত্বেও এ উপজেলায় স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগীদের সেবা প্রদান করে চলেছেন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী। অনেক স্বাস্থ্যকর্মী মাঠ পর্যায়ের মা ও শিশুদের কাজ সময়মতো ঠিক রেখে নিজেদের মধ্যে অদল বদল করে আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগীদের সেবা প্রদান করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় প্রথম দিকে রামপালে সবচেয়ে করোনা রোগী আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়। সেই সময় এখানে বেশ কিছুদিন মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধ রাখা হয়। তবে পরবর্তিতে নিয়ম অনুযায়ী এখানে মা ও শিশুদের সেবা প্রদানের কাজ অব্যাহত রাখা হয় বলে জানা গেছে। এদিকে সদরের মহাকালী ইউনিয়নে বাগেশ্বর কমিউনিটি ক্লিনিকের একজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা উপসর্গ নিয়ে ইতোপূর্বে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগে ইতোপূর্বে একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী চাকরি থেকে অবসরে গিয়েছেন। কিন্তু এখানো সেই পদগুলো পূরণ হয়নি বলে জানা গেছে। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারীদের নেতা রওশন জানান, জনবল সংকটের মধ্যে দিয়ে আমাদের এখানে বর্তমানে কাজ করতে হচ্ছে।