নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের আঃ হাই এর মেয়ে সুমাইয়ার ঘর ভাঙলো যৌতুকের কারণে। জানা যায়, ২০২০ এর ফেব্রুয়ারী মাসে আপরকাঠি শালকেরপাড় গ্রামের মোতালেব মালের ছেলে আশিক মালের সাথে প্রেম করে বিয়ে হয় দরিদ্র ঘরের মেয়ে সুমাইয়ার। পরে তা মেনে নেয় উভয়পক্ষ। কাবিন হয় তিন লাখ টাকা। কিছুদিন না যেতেই স্বামী আশিক, ভাসুর রাসেল, ননদ মিতু, শ্বশুর ও শাশুড়ি যৌতুকের জন্য চাপ দেয়, সাথে ভর দেয় চাচাশ্বশুর করিম মাল। ননদ মিতু গায়ে হাত তোলে। স্বামী আশিক কঞ্চি দিয়ে পেটানোর পরে কয়েলের আগুন দিয়ে হাতে, রানে এবং গোপন কয়েক জায়গায় স্যাঁকা দেয়। মুখে কাপড়ের টুকরা ঢুকিয়ে খামের সাথে বেধে মারধর করে। ননদ আর শাশুড়ি ইন্ধন দেয় আশিককে। এ ঘটনা বাড়ির সবাইকে বলে এবং পোড়া দাগ দেখায় সুমাইয়া, তারপরেও কেউ প্রতিবাদ করেনি। সুমাইয়ার বাবা আঃ হাই একজন ড্রাইভার ছিলেন। বর্তমানে নানা রোগে জড়িত। আহারে অনাহারে কারো সাহায্যে দিন চলে তার। কোথায় পাবে নগদ টাকা, স্বর্ণের খাট, সোকেস, ফ্রিজ। সুমাইয়ার আঘাতের দাগ ও ঘটনা সবাইকে জানানোর পরে গত শনিবার বিকেলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আশিকের বাড়িতে এক সালিশি হয়। সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন সাফ বলে দেয় তাদের সংসারে সুমাইয়ার ঠাঁই নেই। নির্যাতনের ক্ষত দেখানোর পরেও আশিক বলে এগুলো নাকি এমনিতেই হয়েছে। অসহায় পিতা আঃ হাই বলেন, আমি ক্যামনে তাদের চাহিদা মেটাবো, আমি অসুস্থ। পথ্য কিনতে পারিনা। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে আমার। সুমাইয়া তার হাতের পোড়া দাগ দেখায় এবং নির্যাতনের ভয়ংকর বর্ণনা দিতে গিয়ে বারবার আতকে উঠে। বলে, আমি এভাবে খালি হাতে গেলে ও আমাকে মেরে ফেলবে। ওর শাশুড়ি ও ননদ বলে দিয়েছে সবকিছু নিয়ে আসবি নইলে গলায় দড়ি দিয়ে মরিস। এ ক’দিনেই নানাভাবে চরিত্র নিয়ে কথা তুলেছে ওরা। সুমাইয়া আরও বলে, আশিক তো জানতো আমরা গরীব তারপরেও বিয়ে করে, এখন কি হবে আমার? গরীব বলে কি আমরা মানুষ নই? আমি আইনি সহায়তা নেবো। আর যেনো কোন মেয়ের জীবন এভাবে নষ্ট না হয়।