নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসুদিয়া গ্রামের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ঝুনু আক্তার এর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমি একই গ্রামের মৃত নওশেদ মাঝির ছেলে ওহিদ মাঝির নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ একটি চক্র জোর করে দখল ও বিক্রির পায়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমির মালিক ঝুনু আক্তার লৌহজং থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
গতকাল বুধবার সকালে লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের বাসুদিয়া গ্রামের সড়কের পাশে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝুনু আক্তার গংয়ের সম্পত্তিতে একটি মালিক সাইনবোর্ডে জমির মালিকদের নাম, খতিয়ান, দাগ, মৌজা, জমির পরিমাণ, আদালতে চলমান মামলা নম্বরসহ বিস্তারিত উল্লেখ করে সাইনবোর্ড টানানো ছিল। ওহিদ গং রাতের আঁধারে তা নীল রং দিয়ে মুছে ফেলেছে।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওহিদ গং মালিকানা দাবি করে বিক্রির জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে ক্রয়সূত্রে মূল মালিক মোঃ ইয়াসিন মুসল্লী গং। ওহিদ গং ওয়ারিশ থেকে ক্রয় করছে বলে দাবি করেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
জমি দখলের পায়তারা বিষয়ে মৃত লতিফ মুসল্লীর ছেলে মোঃ ইয়াসিন মুসল্লী বলেন, আমি এমতাজুদ্দিন শেখের কাছ থেকে ক্রয়সূত্রে মালিক এবং দীর্ঘদিন ভোগদখল এবং নামজারী করে সরকারকে খাজনা দিয়ে আসছি। তবে এমতাজুদ্দিন ওয়ারিশগণ ২০১৭ সালে জমি বিক্রি করেন ওহিদ গংয়ের কাছে। ওহিদ গং এলাকায় ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিতি। আমার ১৯৮৩ সালের ক্রয়সূত্রে দলিল ও নামজারি আছে। ওহিদ গং ক্রয়সূত্রে মালিক দাবি করে তবে কোন সঠিক কাগজ দেখাতে পারে না। জোর করে বিক্রি ও দখলের চেষ্টা করছে। গ্রামে একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্যসালিশি করা হলে কোন প্রমাণাদি সে দেখাতে পারেনি। পরে বিষয়টি নিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছি। তারা আদালতে হাজির হয় না। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
খিদিরপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ঝুনু আক্তার বলেন, ওহিদ গং আদালতে কোন হাজিরা না দিয়ে বিভিন্ন সময়ে লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক জমি দখল ও বিক্রির পায়তারা করছেন। আমার শ্বশুর ও আমার স্বামীকে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করছেন। জমিতে টানানো সাইনবোর্ডের রং নষ্ট করে ফেলেছেন। গত সপ্তাহে বিকালে ওহিদ গং জমি দখলের চেষ্টা করলে আমরা পৌঁছলে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারার হুমকি দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
এসময় তিনি আরো বলেন, ওহিদ গং গ্রামে ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাসুদিয়া মৌজার খতিয়ান নং সি.এস ৬৬, এস.এ ৭৩ ও আর.এস ১৬ দাগ এবং সি.এস ও এস.এ ৭৩৮ এবং আর.এস ৯১৪ এর ৪৮ শতাংশ জায়গার মধ্যে ১৭.৫০ শতাংশ জমি ক্রয়সূত্রে মালিক ইয়াসিন মুসল্লী গং এবং পৈতৃক সূত্রে মালিক মোশাররফ মুসল্লী, নূর মোহাম্মদ মুসল্লী ও ঝুনু আক্তার। তারা দীর্ঘদিন ভোগ দখলে রয়েছেন।
অভিযুক্ত বাসুদিয়ার মৃত নওশেদ মাঝির ছেলে ওহিদ মাঝির সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে লৌহজং থানা তদন্ত অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, খিদিরপাড়া ইউপি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য তাকে ও তার পরিবারের লোকজনকে মেরে ফেলবে এবং জোরপূর্বক জমি দখল ও বিক্রির বিষয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।