নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারী লৌহজং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী শ্রাবন্তী রাজবংশীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে একই এলাকার মাদকসেবী বখাটে টুটুল রাজবংশীর বিরুদ্ধে।
অভিযোগে জানা যায়, গত রবিবার সকালে শ্রাবন্তী রাজবংশী তার কয়েকজন সহপাঠীকে নিয়ে সকাল সাড়ে ৯টায় সরকারী লৌহজং কলেজে বিশেষ ক্লাশের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে কলেজে যাওয়ার পথে বড় নওপাড়া গ্রামের কৃষ্ণ রাজবংশীর ছেলে টুটুল রাজবংশী পথ আটকে শ্রাবন্তীর গতি রোধ করে। কিছু বোঝার আগেই বখাটে টুটুল শ্রাবন্তীর চুলের মুঠি ধরে তাকে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে শ্রাবন্তী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার সহপাঠিরা শ্রাবন্তীকে ধরতে এলে বখাটে টুটুল তাদের দেখে নেবে এবং তাদেরকেও মেরে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে শ্রাবন্তী ও তাদের সহপাঠিদের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে টুটুল পালিয়ে যায়। শ্রাবন্তীর পরিবার বিষয়টি প্রথমে কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক ও উপধ্যক্ষ মো. শহীদুর রহমানকে জানায়। এরপর শ্রাবন্তীর মা পার্বতী রাজবংশী বাদি হয়ে টুটুলের বিরুদ্ধে লৌহজং থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।
সরকারী লৌহজং কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক জানান, এই বিষয়টি আমাকে গত রোববার বিকেলে জানানো হয়। এরপর আমি আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি খুলে বলি। তবে এই বিষয়টি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং তার পাশাপাশি বখাটে টুটুলকে গ্রেফতারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এই বিষয়ে মামলার বাদি শ্রাবন্তীর মা পার্বতী রাজবংশীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বখাটে মাদকসেবী টুটুলের সাথে অপর এক মহিলার অবৈধ সম্পর্কের কথা শ্রাবন্তী জেনে ফেলায় এবং বিষয়টি ফাঁস করে দেয়ার ভয়ে টুটুল শ্রাবন্তীর উপর এই হামলা চালায়। একই পাড়ায় বসবাসরত টুটুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, থানায় মামলার কথা শুনে টুটুল এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।
কথা হয় তার মা কাঞ্চন রাজবংশীর সাথে। তিনি জানান, ঘটনাটি সত্য। টুটুল শ্রাবন্তীকে আঘাত করেছে এইজন্য আমরা দুঃখিত। আমরা শ্রাবন্তীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছি। তিনি আরও জানান, টুটুল আর শ্রাবন্তী সম্পর্কে প্রতিবেশি চাচা-ভাতিজি। ওকে একটু শাসন করতেই পারে এটা নিয়ে এমন কি হয়েছে? এই বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান হাজী রফিকুল ইসলাম মোল্লা জানান, বিষয়টি আমি কলেজের অধ্যক্ষের কাছ থেকে শুনেছি তবে ছেলেটি একটু বেয়াদব ও বখাটে। সে এমন অন্যায় কাজ করেছে কেউ বিষয়টি ভাল চোখে দেখছে না। আমি তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করছি।
মেয়েটির পরিবার থেকে জানানো হয়, শ্রাবন্তীর মাথায় প্রচন্ড আঘাতের কারণে তাকে প্রথমে লৌহজং সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার অবস্থার অবনতি হলে গতকাল সোমবার ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ইমাম হোসেন জানান, এমন একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আসামীকে ধরতে সকল চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে সে পলাতক রয়েছে।