নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়নের খৈয়াগাঁও, হাওলাদারপাড়া ও দতপাড়ায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কৃষিজমি ভরাটের মহোৎসব চলছে। এসব জমি ভরাট বাণিজ্যে অবৈধভাবে ড্রেজার পাইপের সংযোগের রাস্তা কাটার পাশাপাশি ড্রাম ট্রাকে বালু বহন করে সড়কের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের ষোলঘর খৈয়াগাঁও-বীরতারা সড়কের স্থানীয় চেয়ারম্যানের ওয়্যারহাউজের পাশে বিস্তীর্ণ কৃষিজমি ভরাটের কর্মযজ্ঞ চলছে। এলাকার একটি মাটি সিন্ডিকেট চক্র ড্রাম ট্রাক দিয়ে দিনরাত সমান তালে মাটি আনছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এসব ড্রাম ট্রাকের ওভারলোডিংয়ে মহাসড়কের লিঙ্ক রোড হিসেবে পরিচিত খৈয়াগাঁও-বীরতারা সড়কটি এখন হুমকির মুখে। একদিকে সড়কটি যেমন দেবে যাওয়ার সঙ্গে পুরো রাস্তা জুড়ে ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে। এতে পথচারীরা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছেন। অপরদিকে ভাঙাচুরা সড়কে যান চলাচলেও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একই সড়কের বীরতারা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জালাল মাস্টারের বাড়ির সামনেও অবৈধভাবে ১টি ড্রেজার সংযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট বাণিজ্য চলছে। অন্যদিকে ষোলঘর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কেয়টখালী আর্মি ক্যাম্প সংলগ্ন কেয়টখালীর হাওলাদার পাড়া ও শেখ পাড়ায় মাটিখেকো মো. মফিজুলের নিয়ন্ত্রণে ২টি এবং ঐ এলাকার দতপাড়া মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার দক্ষিণ পাশে মো. রাসেল মনিরের ১টি ড্রেজার স্থাপন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ড্রেজার ব্যবসায়ীরা জমি ভরাট বাণিজ্যের জন্য গ্রামীন কয়েকটি শাখা রাস্তা কেটে ড্রেজারের মোটা পাইপ সংযোগ দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, যত্রতত্রভাবে ড্রেজারের পাইপ নেওয়ার ফলে তাদের যাতায়াতে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তার কোন কোন জায়গা কাটাও হয়েছে। সরকারি রাস্তার ক্ষতি ও মানুষের যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে দেদারছে জমি ভরাট করছেন ড্রেজার ব্যবসায়ীরা।
ওই এলাকার পূর্ব-দেউলভোগ ও খৈায়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, মামা হালিমসহ এখানকার রেস্টুরেন্টগুলোতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসেন। ড্রাম ট্রাকের দৌরাত্মে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বেহাল হচ্ছে। সেই সাথে সড়কে প্রচুর ধুলাবালি উড়ছে। ভাঙাচুরা সড়কটিতে এ অবস্থায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। রাস্তা ও কৃষিজমি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম লিপটনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের নিষেধ করেছি। রাস্তা নষ্ট করার বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকেও অবহিত করেছি।
এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে ড্রেজার ব্যবসায়ী মো. মফিজুলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মো. রাসেলের কাছে জানাতে চাইলে তিনি দম্ভ করে বলেন, রাস্তা নষ্ট হয়েছে কে বলেছে। সে এখানে এসে দেখিয়ে যাক। আপনার ভরাট বাণিজ্যে এলাকার রাস্তার ক্ষতিসাধন হচ্ছে উল্লেখিত এমন স্থানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাবে বলেন, পরে রাস্তা ঠিক করে দেয়া হবে।
ষোলঘর ভূমির উপ-সহকারী মো. আসাদুজ্জামান এ ব্যাপারে জানান, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আপনাদের মাধ্যমে এখন জানলাম। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।