নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীনগর উপজেলার আটপাড়া ইউনিয়নের কল্লিগাঁও ছাড়পত্রবিহীন একটি ঢালাই কারখানা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। শ্রীনগর-মুন্সীগঞ্জ সড়কের কল্লিগাঁও রাস্তার পাশে অবৈধ কারখানার বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এসব বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে অত্র এলাকায়। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন অত্র এলাকাবাসী। সর্বশেষ গত ১৮ মে দুপুরের দিকে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রণব কুমার ঘোষ কল্লিগাঁও অবস্থিত মেটাল ব্যবসায়ী সোহরাব আলীর মালিকানাধীন কারখানায় ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অপরদিকে ১৫ দিনের মধ্যে নিজ দায়িত্বে অবৈধ কারখানাটি ভেঙ্গে নেয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে একইদিন বিকালে ষোলঘর উমপাড়া মহাসড়ক সংলগ্ন গড়ে উঠা অন্য একটি অবৈধ ঢালাই কারখানা উচ্ছেদ করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আটপাড়ার কল্লিগাঁও কারখানার সংশ্লিষ্টরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দিনরাত সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন। কারখানার চুল্লিতে বিভিন্ন প্রকার ধাতব পদার্থ, রাসায়নিক দ্রব্য ও এসিডের সংমিশ্রণে আগুনে পুড়িয়ে সীসার প্লেট তৈরী করা হচ্ছে। এতে চুল্লির বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে।
কল্লিগাঁও কারখানাটির কর্ণধার মো. সোহরাব শেখের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও আমাকে বলেছেন কারখানা চালাতে।
এ ব্যাপারে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণব কুমার ঘোষ জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কল্লিগাঁওয়ের ওই ঢালাই কারখানাকে দুইবার আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। সর্বশেষ জরিমানা করে কারখানাটি সরানোর জন্য মালিককে নির্দেশ দিয়ে আসি। এ বিষয়ে আমার সাথে কারখানা মালিকের কথা বলার সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শ্রীনগর-তন্তর সড়কের বাড়ৈগাঁও রাস্তা সংলগ্ন পাশাপাশি ২টি ঢালাই কারখানায় সীসা তৈরী করা হচ্ছে। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ষোলঘর উমপাড়ায় উচ্ছেদকৃত ঢালাই কারখানাটি পুনরায় প্রস্তুত করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই চালুর লক্ষ্যে ঘর তোলা হচ্ছে। এছাড়াও মহাসড়কের পাশে ষোলঘর কবরস্থান ও ষোলঘর ভূঁইচিত্র কবরস্থান সংলগ্ন জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা সংলগ্ন একটি নতুন ঢালাই কারখানা চালু করার অপেক্ষায় আছে। কারখানায় কাজ শুরু করা হলে অবৈধ কারখানার চুল্লির বিষাক্ত ধোঁয়ায় মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্রদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে।
ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষক জানান, কল্লিগাঁওয়ের কারখানা থেকে দখিনা বাতাসের সাথে দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট অনুভব হচ্ছে। এর মধ্যে মাদ্রাসার কাছে কারখানাটি চালু হলে ছাত্ররা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে।