নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে মাটিবাহী ড্রাম ট্রাকের অবাধ যাতায়াতে সড়কের বেহাল দশা। এসব ড্রাম ট্রাকের ওভারলোডিংয়ে কাঁচা-পাকা সড়ক নাজুক হয়ে পড়েছে। এতে সাধারণ মানুষ ও কৃষিপণ্যবাহী যান চলাচলে বিপাকে পড়েছে। উপজেলার তন্তর ইউনিয়নের পাড়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রধান পাকা সড়কসহ একটি গ্রামীণ কাঁচা রাস্তার ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, ওই এলাকার শেখ মজলিশের পুত্র আব্দুর রাজ্জাক শেখ জায়গা ভরাটের জন্য ড্রাম ট্রাক আনা-নেওয়া করে সড়কের বেহাল দশা করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভারী বালুবাহী ড্রাম ট্রাকের অবাধ চলাচলের ফলে সরকারি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তন্তর-নওপাড়া নামক প্রধান সড়কের পাড়াগাঁও সেতুর দক্ষিণ পাশে সড়কের বেহাল চিত্র লক্ষ্য করা যায়। এই অবস্থায় স্থানীয় কৃষকেরা উৎপাদিত আলুসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য সংরক্ষণে বেকায়দায় পড়েছেন। রাস্তা খারাপের কারণে আলুবাহী বাইসাইকেল ও অটোগুলো সড়কে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। বাধ্য হয়েই পণ্যবাহী এসব যানগুলোকে মানুষ ঠেলা-ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে পাকা সড়কের সেতুর অ্যাপ্রোচের একপাশে থাকা বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা খুঁটি ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় ভেঙ্গে ও হেলে পড়ার চিত্রও চোখে পড়েছে।
মোঃ সুমন, সিরাজ হাওলাদার, রুবেলসহ স্থানীয় কৃষকেরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে আব্দুর রাজ্জাক জায়গা ভরাট কাজের জন্য ড্রাম ট্রাকে করে মাটি আনছেন। ড্রাম ট্রাক দিয়ে সড়কের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছেন তিনি। এখন আলুর মৌসুম। রাস্তা খারাপের জন্য উৎপাদিত ফসল হিমাগারে পাঠানো নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। ভাঙাচুড়া রাস্তার কারণে আলু নিতে সাইকেল ও অটোচালকদের অতিরিক্ত টাকা দিয়েও রাজি করানো যাচ্ছে না। আমরা আব্দুর রাজ্জাককে রাস্তার ক্ষতি না করার জন্য অনুরোধ করেছি। এর আগেও ভরাট কাজের জন্য ড্রাম ট্রাক এনে রাস্তার ক্ষতি করেছেন তিনি।
প্রান্তিক কৃষক ও জনসাধারণের দূর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা দাবী করে বলেন, রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে এটা ঠিক। কাজ শেষ হলে আমি রাস্তা ঠিক করে দিবো। পূর্বেও রাস্তার ক্ষতি করার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবী করে বলেন, ওই সময়ও তিনি ভাঙ্গা রাস্তায় ইটের সুরকি ফেলেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে তন্তর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য শফিকুল ইসলাম মিঠুর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি কল কেটে দেন। তার কিছুক্ষণ পর পুনরায় যোগাযোগের চেষ্টা করে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলী আকবর জানান, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে রাস্তা-ঘাটের ক্ষতিসাধন করা ঠিক নয়। খোঁজ নিয়ে দেখছি।