নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আল-আমিন আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজ সংলগ্ন হাজী আতাহার আলী স’মিল নামক একটি গাছের গুঁড়ি কাটার স’মিলের বিকট শব্দের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে আশেপাশে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দারা। একদিকে গাছ কাটার গুঁড়ি ধুলিকণা হয়ে বাতাসের সাথে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে সেই গাছ কাটার গুঁড়ি নিঃশ্বাসের সাথে মানুষের ভিতরে প্রবেশ করে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। এ নিয়ে বছরের পর বছর আশেপাশে মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করলেও স্থায়ী সমাধান মিলছে না।
স্থানীয়দের দাবি, সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দিনরাত চালানো হচ্ছে এ স’মিলটি। এটির শব্দে স্কুলপড়ুয়া শিশুদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। আর অসুস্থ ব্যক্তিদের তো রেহাই নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, অনেক বছর যাবত এখানে এই স’মিলগুলো চলছে। দিনে তো চলেই রাতেও এর শব্দে ঘুমানো যায় না। বিকট শব্দে বাচ্চাদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোল্ড স্টোরেজের সামনে থেকে রাস্তা দখল করে বড় বড় গাছের গুঁড়ি রাখা হয়েছে। সামনে এগুলোই ডানে একটি স’মিল এবং বামে একটি স’মিল যেখানে শ্রমিকরা কাজ করছে এবং তার পাশেই রয়েছে বসতবাড়ি।
এ ব্যাপারে স’মিলের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ আউয়াল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ফরেস্ট অফিসারকে ভ্যাট, ট্যাক্স দিয়েই এই ব্যবসা করি। ফায়ার সার্ভিসের কাগজ রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অগ্নি নির্বাপক লাইসেন্স নেই।
এ বিষয়ে শ্রীনগর উপজেলা ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা মাহফুজ রিবেন জানান, মুঠোফোনের মাধ্যমে শেখ আউয়াল জানান, তার অগ্নি নির্বাপক লাইসেন্স নেই ঈদের পরে এসে কাগজ জমা দিবেন।
শ্রীনগর উপজেলা বন কর্মকর্তা সেলিম খান বলেন, আউয়াল সাহেব ভ্যাট, ট্যাক্স দিলে সরকারকে দেয়, আমাকে না।
স’মিলের পাশে স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল হক নিশাত শিকদার বলেন, দীর্ঘদিন যাবত পেশি শক্তি খাটিয়ে সরকারি রাস্তা দখলসহ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে আবাসিক এলাকায় দাপটের সাথে স’মিল চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি গভীর রাতে লোকচক্ষুর আড়ালে মালবাহী ট্রাক লোড আনলোড করা হয়। তার স’মিলের পাশেই একটি পুকুর যা খোকা মিয়ার পুকুর নামে পরিচিত। এখন সেই পুকুর আর পুকুর নেই তার নিজস্ব সম্পত্তি হয়ে গেছে। রাতে স’মিলের শব্দে স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাদের মানসিক সমস্যা হচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, কেউ যদি এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।