নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্কুলের জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কবুতরখোলা হাতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, কয়েক বছর পূর্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগোয়া ২টি টয়লেট ও একটি টিউবওয়েল ছিলো যা কৌশলে সরিয়ে দিয়ে দখলে নিয়েছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান।
সরেজমিনে স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হাতারপাড়া মৌজার আর.এস ৬৬৯ নং খতিয়ানের আর.এস ৬৩৭,৭৮৫ ও ৭৮৬ নং দাগের ৩৫ শতাংশ জায়গার উপর সরকারি এ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গড়ে ওঠে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কয়েক বছর পূর্বে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের উত্তর-পশ্চিম পাশে ২টি পাকা টয়লেট নির্মাণসহ ১টি টিউবওয়েল স্থাপন করেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের পাশাপাশি টয়লেট নির্মাণ করা হলে পূর্বের টয়লেট ও টিউবওয়েল ব্যবহার না করায় তা অকেজো হয়ে যায়। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম অকেজো টয়লেট ঘেঁষে রফিজ বেপারী নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু জায়গা ক্রয় করেন এবং কৌশল খাটিয়ে ক্রয়কৃত ওই জায়গার মাটি কেটে একটি রাস্তায় ব্যবহার করান। আর ওখানে বড় ধরনের গর্ত করে মাটি কাটার ফলে অকেজো টয়লেট ও টিউবওয়েল ধ্বসে পরে। তিনি ধ্বসে যাওয়া টয়লেটের ইট কৌশলে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মুক্তার হোসেন তারা বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতিসহ এলাকার অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের জায়গা মেপে ওই স্থানে টয়লেট ও টিউবওয়েল বসানো হয়েছিল। কিšুÍ বর্তমানে বিদ্যালয়ের টয়লেট ও টিউবওয়েলের জায়গা কৌশলে খালি করে সেখানে ভবন নির্মাণ করছেন একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। এ বিষয়ে স্থানীয় বর্তমান ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম খান বলেন, একজন সাবেক চেয়ারম্যানের তো সরকারি জায়গায় যাওয়ার কথা না যদি যেয়ে থাকেন তাহলে বিষয়টা দেখতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমি এলাকাবাসী একজনের কাছে বিষয়টি জানার পরে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক খানকে জানালে সে বলে তোমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি তাহলে তুমি এটা নিয়ে মাথা ঘামাবে কেনো।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি জুলহাস সারেং বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি থাকাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের জায়গা মেপে ওই স্থানে দুটি পাকা টয়লেট নির্মাণসহ ১টি টিউবওয়েল স্থাপন করেছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তার ক্রয়কৃত জায়গাসহ বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন বলে শুনেছি।
বিদ্যালয়ের জায়গা-দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ বিষয়ে জানতে রাঢ়ীখাল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি মোবাইল ফোনটি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে শ্রীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। এখন জানতে পেরেছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।