নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ড্রেজারের মাধ্যমে ধলেশ^রী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলন করায় মো. সেলিম (৫১) নামে এক ড্রেজার ব্যবসায়ীকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ড্রেজার ব্যবসায়ী দীর্ঘ দুই মাস যাবৎ উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের গোয়ালখালী এলাকায় ধলেশ^রী নদী থেকে বালু-মাটি উত্তোলন করছিলো। গত শনিবার বিকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা ফারজানা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০/৪ এর গ ও ঘ লঙ্ঘন ১৫(১) ধারায় অপরাধে তাকে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিত্রকোট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হুদা বাবুলের সহযোগিতায় প্রায় আড়াই মাস যাবৎ রাস্তা তৈরীর নামে নদীতে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করে ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম। এই ইউপি সদস্য গোয়ালখালী ও তুলশিখালি গ্রামের বেশকিছু বাড়ির নিচু জমি ও ডোবা ভরাট বাণিজ্য করে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় কোটি টাকা। উপজেলা প্রশাসন তাকে নিষেধ করার পরও সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত নদীতে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করতো। সকাল হলেই তুলশিখালি ঘাটে এনে ড্রেজার রাখতো। পরে উপজেলা প্রশাসন কয়েকবার হানা দিয়েও তাদের ধরতে পারেনি।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তার সীমানা এলাকায় ধলেশ^রী নদীতে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার খবর পেয়ে অভিযান চালায়। তার সীমানা সংলগ্ন সিরাজদিখানের ধলেশ^রী নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করায় সেলিমকে আটক করে। এরপর সিরাজদিখান থানার তদন্ত কেন্দ্র’র পুলিশের হাতে তাকে তুলে দেন।
তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন জানান, আমাদের হাতে সেলিমকে দেওয়ার পর আমরা তাকে সিরাজদিখান থানায় পাঠাই।
সিরাজদিখান থানার ওসি জানান, আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট করার জন্য পাঠাই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, সেলিম ড্রেজারের মালিক। সে ভাড়ায় এখানে নদীর মাটি কাটছিলো। আমরা তথ্য অনুযায়ী ইউপি সদস্য শহিদুলের বাড়ি গিয়ে তাকে আটকের চেষ্ট করি। কিন্তু তিনি ছোট এক বাচ্চাকে বাড়ি রেখে বাকিদের নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শনিবার দুপুরে সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে বলি। আইনের ধারায় সেলিমকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, আমার এলাকার জনগণের চলাচলের জন্য একটি হালটে নদী থেকে মাটি এনে রাস্তা করছিলাম। বেশিরভাগ রাস্তায় মাটি ভরাট হয়েছে। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন নিষেধ করায় একমাস আগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। ড্রেজার ভাড়া এনে চেয়ারম্যানকে জানিয়েই কাজটি করছিলাম। আমি কোন বাড়িতে মাটি বিক্রি করিনাই। আইনকে শ্রদ্ধা করে কাজ বন্ধ রেখেছি।