নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার ও স্মারকলিপি পেশ করে সম্মানহানীর চেষ্টা করছে একটি মহল। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার জৈনসার ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম ঢালীর বিরুদ্ধে। গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ৫ লাখ চার হাজার টাকার কাঁঠালতলী গ্রামে ১৭০ মিটার দীর্ঘ, ১২ ফুট প্রস্থ একটি রাস্তার কাজ গত ৫ মাস আগে সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজটি তদারকি করে বুঝে নেন এবং সঠিকভাবে কাজটি সম্পন্ন হওয়ায় বিল পরিশোধ করে দেন। দীর্ঘদিন পর একটি মহল কাজে অনিয়ম ও টাকা আত্মসাৎ হয়েেেছ বলে নানা অপপ্রচার চালায়। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দুদু অবগত থাকায় তিনি এই অপপ্রচারে দুঃখ প্রকাশ করেন। সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, একটি মহল মোয়াজ্জেম মেম্বারের বিরুদ্ধে সামনে নির্বাচন সেজন্য উঠে পড়ে লেগেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসকের নিকট একটি স্মারকলিপি পেশ করেছে। স্মারকলিপিতে এলাকাবাসী ও প্রবাসীসহ অনেকে স্বাক্ষর না করলেও তাদের নামে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে। আবার অনেককে ত্রাণ দিবে আবার অনেককে চাউল দিবে একথা বলে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে বলে তারা জানান। ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম ঢালী জানান, আমি রাস্তার কাজ করেছি। সেটি সঠিকভাবে করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইঞ্জিনিয়ার পরিদর্শন যাচাই করে আমার বিল দিয়েছে। কিন্তু রাস্তার কাজের আগে নিচু জমি ও খাল ভরাট করেছে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এলাকাবাসীর সহযোগিতায়। কারণ সরকারি ১২ ফুট রাস্তাটি ম্যাপ অনুযায়ী ছিল খালের উপর। বাড়ির পাশ দিয়ে ৪ ফুট রাস্তা সেটি এলাকাবাসীর। সেখান দিয়ে তো কেউ ১২ ফিট জায়গা ছাড়বে না। তাই তারা সরকারি রাস্তা যে বরাবর ছিল সেটি ভরাট করে দেয় এবং আমি সরকারি নিয়ম মোতাবেক রাস্তার কাজ সম্পন্ন করি। আমার বিরুদ্ধে সাবেক ইউপি সদস্য যুবদল নেতা তৌহিদুজ্জামান টিটু শেখ, বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফা মন্টু ও শামিম সিকদারসহ তাদের পক্ষের একটা গ্রুপ উঠে পড়ে লেগেছে। গ্রামবাসীর সাথে জৈনসার ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি শেখ নাজিম উদ্দিন কয়েকজনকে সাথে নিয়ে টাকা উত্তোলন ও নিচু জমি ভরাটে মিটিং ও লেনদেন করেছে। এখন তারাই আবার আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে। আমি এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ও প্রকল্প কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। আমাকে মানসিক ও সামাজিকভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার করে হেয় করা হয়েছে। এখন আমি আইনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে সত্য উদঘাটন করবো। সাবেক ইউপি সদস্য তৌহিদুজ্জামান টিটু জানান, মিটিংয়ে আমি ছিলাম না। এলাকাবাসী মোয়াজ্জেম মেম্বারের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দিয়েছে। এলাকাবাসী রাস্তার জন্য জায়গা ছেড়েছে। তৌহিদ ঢালী ও মোয়াজ্জেম মেম্বার এলাকাবাসীর টাকা উত্তোলন ও খরচ করেছে। মিটিংয়ে তারা এলাকাবাসীর সহযোগিতা চেয়েছে। রাস্তাটি ৩০ বছর আগের এর আগেও মোয়াজ্জেম ঢালী একটা বরাদ্দ পেয়েও ঠিকমত কাজ করে নাই। যার যার স্বাক্ষর সে সে দিয়েছে এখানে কোন কারচুপি নাই। জৈনসার ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি শেখ নাজিম উদ্দিন জানান, ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা এলাকাবাসী উঠাইছে এবং মেম্বারের চাচাতো ভাইয়ের কাছে দিছে। আমি টাকা হাত দিয়াও ধরিনাই। ২ লাখ টাকা খরচ করছে বাকি টাকা মেম্বার খাইছে এবং সরকারি বরাদ্দের ৫ লাখ ২০ হাজারও মেম্বার খাইছে।
গোলাম মোস্তফা মন্টু জানান, রাস্তাটি কাজ ধরার ২/৩ দিন পরে মোয়াজ্জেম মেম্বার জানায় সরকারি টাকা ফেরত চলে গেছে। তাই এলাকাবাসীর প্রয়োজনে শমশের আলম ভুইয়া ও আলী হোসেন লাবু মাঝি এলাকাবাসীর নিকট থেকে ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা উঠাইছে। আরো জানতে চাইলে তিনি বলেন বিস্তারিত স্মারকলিপিতে দেওয়া আছে। ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দুদু জানান, আমি বিষয়টি নিয়ে অবগত হয়েছি। মোয়াজ্জেম রাস্তার কাজ করেছে। সেখানে কোন অনিয়ম বা অর্থ অপচয় হয়নি। কিন্তু একটি মহল অপপ্রচার করে ছেলেটির মান-সম্মান ক্ষুন্ন করছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আইমিন সুলতানা জানান, আমরা বরাদ্দ দিয়েছি, বরাদ্দ অনুযায়ী কাজ বুঝে পেয়ে বিল দিয়েছি। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানসহ অনেকে অবগত আছেন। আর ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট বা টাকার লেনদেন সেটা আমাদের বিষয় না। এ বিষয়ে আমরা জানি না।