নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) কর্তৃক স্বীকৃত সদস্য নেই অথচ নিজেদের পরিচয় দেন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ইঞ্জিনিয়ার নাম পরিচয় ব্যবহারকারী দুইজন নামধারী ইঞ্জিনিয়ারের সন্ধান মিলেছে। নামমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী নিয়ে, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সদস্য না হয়েও নিজেদের নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার বসিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চালিেেয় যাচ্ছেন তাদের রমরমা বাণিজ্য। জমির মালিকদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নকশা প্রণয়ন ও বিল্ডিংয়ের ডিজাইন অন্যজনের কাছ থেকে চুক্তি করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এর ফলে উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০০৮ সালের প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটে অপঃ, ১৯৫২ ও ১৯৫৩ এর ১৮ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ, উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও অপসারণ সংক্রান্ত বিধিমালা, ২০০৮ জারি করে। জারিকৃত বিধিমালার ৪১নং ক্রমিকে বলা হয় কাউকে প্রকৌশলী হতে হলে তাকে প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রীপ্রাপ্ত ও শুধু ডিগ্রীধারী হলেও চলবেনা ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) এর কর্তৃক স্বীকৃত সদস্য হতে হবে। অথচ অভিযুক্ত সাদ্দাম ও সোহেল নামে দুই ব্যক্তি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন কর্তৃক স্বীকৃত কোন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডিগ্রীধারী নন এবং নকশা প্রণয়নের জন্য কারিগরি ব্যক্তি হিসেবে তারা তালিকাভুক্ত না হয়েও দেদারসে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত সাদ্দাম ও সোহেল উপজেলার সিরাজদিখান-নিমতলা সড়কের কাঠপট্টি নামক স্থানে অবস্থিত আলমগীর কমপ্লেক্সের নীচতলায় পদ্মা আর্কিটেক্ট ও ইঞ্জিরিয়ারিং নামে একটি অফিস খুলে বসেছেন। অফিস নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার নাম ব্যবহার করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে জানা যায়, কিছু মিস্ত্রি ও কনট্রাক্টরদের হাতে রেখে মানুষকে ভুলভাল বুঝিয়ে সাধারণ জমির মালিকদের বিল্ডিং ও নকশা প্রণয়ন করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সোহেল ও সাদ্দাম বলেন, আমরা নিয়ম-নীতি মেনেই কাজ করছি। কোনরকম অবৈধ কাজ আমরা করছি না।
এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন এর আজীবন সদস্য ও দোহার পৌরসভার নকশা অনুমোদন কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শাহিন হোসেন বলেন, (আইইবি) কর্তৃক স্বীকৃত না হয়ে কোন ব্যক্তি তার নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার ব্যবহার করতে পারবেন না এবং কোন ধরনের বিল্ডিংয়ের কাঠামোগত নকশা প্রণয়ন করতে পারবেন না। তাহলে সোজা কথা এ বিষয়ে তারা কোন কাজও করতে পারবেন না। আর যদি তা করে তবে তারা অবৈধ কাজ করছেন যা নীতিমালার পরিপন্থি।
সিরাজদিখান উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি জানান, আসলে আইইবি অনুমোদনকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডিগ্রী অর্জন করে বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন এর সনদ গ্রহণ করে ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। আর যদি তা না হয় তাহলে কেউ এ সংক্রান্ত কোন কাজে নিয়োজিত হতে পারবে না। আমরা বিষয়টি শুনেছি। আমরা দেখছি এ নিয়ে কি করা যায়।
সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ বিষয়ে যদি কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হবে।