নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের সৈয়দ জানে আলমের বাড়ি থেকে ২টি ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়াসহ চার পরিবারের লোকজনকে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সৈয়দ জানে আলম বাদী হয়ে এরশাদ ঢালী (৪০), মোঃ মামুন ঢালী, কামাল মোল্লা (৩৬), সাইফুল ঢালী (২৬), মজিবর ঢালী (৫৫), কাউসার (৪৫) ও রমিজ (২৭)সহ ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে সিরাজদিখান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় ইছাপুরা ইউনিয়নের চন্দনধুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের চন্দনধুল গ্রামের মৃত সৈয়দ আহম্মদের ছেলে সৈয়দ জানে আলম ইছাপুরা ইউনিয়নের চন্দনধুল মৌজার আর.এস দাগ নং-২৯১, ২৯২ ও ২৯৩ দাগের ৭০ শতাংশ জায়গা ভোগ দখল করে আসছিলো। ২০৩৪/২০১০ মামলার হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, এই সম্পত্তিতে স্থায়ী স্টে অর্ডার করা হয়। ভোগ দখলে থাকা অবস্থায় একই গ্রামের মৃত খালেক ঢালীর ছেলে এরশাদ ঢালী (৪০), মৃত ইউনুস ঢালীর ছেলে মোঃ মামুন ঢালী (৪৫), মোহাম্মদ তাজেল ঢালীর ছেলে সাইফুল ঢালী (২৬), মৃত বাবুল ঢালীর ছেলে কামাল মোল্লা (৩৫), মৃত ইছব ঢালীর ছেলে মজিবর ঢালী (৫৫), মৃত জমির ঢালির ছেলে কাউসার (৪৫), মৃত বাবুল ঢালীর ছেলে রমিজ (২৭) দখল করার পাঁয়তারা করে আসছিলো। যার পরিপ্রেক্ষিতে সৈয়দ জানে আলমের চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় গত ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর একটি নন এফআইআর মামলা অভিযোগ করেন। সেটি বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাদের সমনজারি করেন। সেই সমনজারির জের ধরে গত ২০২২ সালের ২৪শে নভেম্বর আনুমানিক দুপুর ৩টার দিকে বিবাদীরা সৈয়দ জানে আলমের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে সৈয়দ জানে আলমের ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে ভাংচুর করে ও সেখানে থাকা সৈয়দ জানে আলমের অন্তঃসত্ত্বা ভাগ্নিকে মারধর করে। ভাগ্নির ডাকচিৎকারে সৈয়দ জানে আলমের বোন ফনি বেগম সেখানে গেলে তাকে এবং ফনি বেগমের ছেলে নাঈম মিয়া সেখানে গেলে তাকেসহ মারধর করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সৈয়দ জানে আলমদের ১২৩ বছর পুরোনো একটি দরগাহ রয়েছে। সেই শতবর্ষী দরগায়ও হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে তাদের ওরশ অনুষ্ঠিত হতো প্রতিবছর। কিন্তু এই বিরোধের জেরে তারা এখন বাড়িছাড়া হওয়ার কারণে সেটিও বন্ধ আছে।
সৈয়দ জানে আলম বলেন, আমাদের সাথে বিবাদীদের আগে থেকেই জমিসংক্রান্ত বিরোধ ছিলো। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ায় তারা আমাদের উপর হামলা করেছে। এর আগেও একবার হামলা করেছিলো। আদালতে তারা মুচলেকা দিয়ে আসার পরেও আমাদের উপর হামলা করেছে। আমরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি এখন বাড়িছাড়া। আমার বাড়িতে আমিই প্রবেশ করতে পারছি না। আমরা আমাদের বাড়িতে থাকতে চাই। তারা আমাদের ঘড়বাড়ি জোর করে ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন, আমরা যেনো এর একটি সুষ্ঠু বিচার পাই। তারা আমাদের বিরুদ্ধে জজ কোর্টে দুইটি ও হাইকোর্টে একটি মামলা করে। যার দুইটির রায় এবং ডিক্রি আমরা পেয়েছি, আরেকটি মামলা চলমান আছে। আমরা এর একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
বিবাদী মামুন বলেন, তাদের এখানে কোন জায়গা-জমি নেই। তাদের কেউ হামলা করেনাই। সেখানে যত জায়গা আছে তা মসজিদের নামে। গ্রামবাসী মসজিদের নামে জায়গা দিয়েছে। জাহাঙ্গীরের বাবা এই মসজিদের ইমাম ছিলো তখন তাদের থাকতে দেয়া হয়েছিলো। এখনো বলা হয়েছে তাদের যদি কাগজপত্র থাকে তাহলে নিয়ে আসতে।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম সুমন বলেন, অভিযোগ পেয়ে সেখানে এসআই মাজিবুল আলমকে পাঠিয়েছি। সেখানে গিয়ে ঘর ভাঙতে বাধা দিয়ে আসেন। ঘড় ভাঙ্গার কিছু অংশ গাড়িতে করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজদিখানে জোর করে বসতঘর ভেঙ্গে নেওয়ার অভিযোগ
আগের পোস্ট