নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের জৈনসার ইউনিয়নের ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী প্রাত্যহিক সমাবেশ (পিটি) করার সময় অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
৭ম শ্রেণির ছাত্রী আছিয়া আক্তার, নাফিজা, নুসরাত, আয়শা, মনিকা, সাদিয়া, কবিতা, ৬ষ্ঠ শ্রেণির হাফছা, ফাতেমাসহ মোট ১৩ জন শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীরা বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা যায়।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এতো গরমে মানুষ যেখানে ঠিক থাকতে পারে না, সেখানে শিশু শিক্ষার্থীদের অ্যাসেম্বলি করার কি প্রয়োজন ছিল? কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমিন উদ্দিন বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, গরমে আমাদের স্কুলে প্রতিটি ক্লাসেই শ্রেণি শিক্ষক দিয়ে পিটি করানো হয়। কিন্তু গতকাল রবিবার সিরাজদিখান থানা পুলিশের একজন অফিসার ইভটিজিং, মাদকবিরোধী কথা বলার জন্য শিক্ষার্থীদের বাহিরে নিয়ে গেলে কয়েকজন শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আঞ্জুমান আরা বলেন, আমার এখানে ভবানীপুর বিদ্যালয়ের ১৩ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে তাদের অবস্থা ভালো আছে। আশা করছি, সবাই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।
সিরাজদিখান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসুস্থতার ঘটনা আমাকে জানিয়েছেন। শুনেছি, অনেক শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
অসুস্থ শিক্ষার্থী নাফিজা আক্তারের বাবা গিয়াস উদ্দিন জানান, আমরা নিজেরাই গরমে ঘরে থাকতে পারছি না, অথচ সমাবেশ করার জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঠে নিয়েছে। আমার মেয়ে বর্তমানে ইছাপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত জানান, ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিদিন প্রাত্যহিক সমাবেশ (পিটি) হয়। গতকাল রবিবার পিটি চলাকালীন সময় আমাদের কাজের অংশ হিসেবে থানার এ এস আই কামরুল ইসলাম উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, মোবাইল ব্যবহারে সতর্কতা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা এসব বিষয়ে নিয়ে প্রায় ৫ মিনিট আলোচনা করেন। এসময় কিছু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও জৈনসার ইউপি চেয়্যারম্যান রফিকুল ইসলাম দুদু বলেন, সিরাজদিখান থানার কামরুল ইসলাম নামে একজন অফিসার আমাদের বিদ্যালয়ে এসে সচেতনতামূলক কথা বলার জন্য শিক্ষার্থীদের মাঠে বের করেছিলেন। ওই সময় শিক্ষার্থীরা প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে।