নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকার সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ তৈরির প্রকল্প অনুমোদন করেছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জাি য়েছেন, কারিগরি শিক্ষার আওতা বাড়াতে চায় সরকার। বলেছেন, ‘আমরা যে প্রকল্পটি পাস করেছি, এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে কর্মমুখী করে গড়ে তোলা। আর সে শিক্ষাটা দেশে ও বিদেশে দুই জায়গাতেই যাতে কাজে লাগতে পারে সেভাবে তৈরি করা। স্কুল ও কলেজের কাজ এ বছর থেকেই শুরু হবে।’ মন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি একটি করে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেসব বিষয় শেখানো হচ্ছে, মন্ত্রী জানিয়েছেন নতুন প্রকল্পের মধ্যে সেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে। বর্তমানে বেশিরভাগ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস, মেকানিক্যাল, অটোমোবাইল, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশন মেইনটেনেন্স, পোশাক কারখানার ইন্ডাস্ট্রিয়াল সুইং চালনা, ওয়েল্ডিং, প্লাম্বিংয়ের মতো বিষয়সমূহ পড়ানো হয়।
কতটা কাজে আসবে?
বাংলাদেশে বেকারত্ব দূরীকরণে বহু বছর ধরে কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ ২০১৭ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, সারাদেশে মোট বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ মানুষ। সেই সঙ্গে প্রতি বছর দেশের শ্রমবাজারে নতুন করে ১৮ লাখ মানুষ যুক্ত হয়। আবার এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করেন। যাদের বড় অংশটি যায় স্বল্প দক্ষ বা অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে। ফলে দক্ষতা বাড়ানোর সরকারি এই উদ্যোগের ফলে প্রবাসে কাজ করতে যেতে চান এমন মানুষের উপকার হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সাধারণভাবে বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার প্রতি অনেকেরই এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, সমাজের কম আয়ের মানুষের ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়তে যায় এবং যারা পড়তে যায় তাদের মেধা অন্যদের চেয়ে হয়তো কম। এ ধারণার সামাজিক ভিত্তি নেই বলে সরকার দাবি করলেও এখনো স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যত শিক্ষার্থী পড়েন, তার ১৫ শতাংশের কম শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন।
আগ্রহ বাড়ছে গ্রামীণ এলাকায়
সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে এখন প্রায় আট হাজারের মতো কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। এর ৯০ শতাংশই হচ্ছে বেসরকারি। এসব প্রতিষ্ঠানে চার বছর মেয়াদী থেকে শুরু করে তিন মাস মেয়াদী পর্যন্ত নানা ধরনের কারিগরি কোর্স পড়ানো হয় কিংবা প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট মানুষেরা বলছেন, কারিগরি শিক্ষার প্রতি ঢাকার বাইরে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।
সুযোগ বাড়ছে কারিগরি শিক্ষার
আগের পোস্ট