নিজস্ব প্রতিবেদক
যাদের লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে তৈরী করা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখে তৈরী করা হচ্ছে স্কুলের সীমানার প্রাচীর -এমনটাই অভিযোগ উঠেছে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের এক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে।
গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার হাঁসাড়া ইউনিয়নের ১০নং পূর্ব হাঁসাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চর্তুদিকের স্কুলের প্রাচীর নির্মাণের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের এই প্রাচীর নির্মাণের ফলে স্কুল সংলগ্ন উত্তর পাশে থাকা ঐ স্কুলে পড়ুয়া ২য় শ্রেণির ছাত্রী শ্রুতি সরকার (৮) ও পূর্ব পাশে বসবাসকারী ৬০টি পরিবারের স্কুলপড়ুয়া ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষের যাতায়াতের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসী। এই ব্যাপারে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগী পরিবারদের পক্ষে ঐ এলাকার সুধীজন বরুণ মন্ডল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রাইমারী স্কুলের পশ্চিম পাশে একটি গেইট রেখে চতুর্দিকে প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। উত্তর পাশে ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশু শ্রুতির পরিবারের যাতায়াতের জন্য ৩ ফুট জায়গা রাখা হয়েছে। সেখানে পূর্বে বসবাসকারী দিলীপ সরকারের পূর্ব দুয়ারী ঘরের পিছনে ৩ ফুট জায়গায় তার কয়েকটি বড় বড় গাছসহ ইটের কণা বোঝাই কয়েকটি বস্তা ফেলা রয়েছে। যাতে করে ঐ ছাত্রী স্কুলে যাতায়াতসহ পরিবারের যাতায়াতের পথ বন্ধ হয়ে গেছে এবং পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে হাইস্কুলের পুকুর পাড়ের হাঁটাচলার রাস্তায় প্রাচীর নির্মাণের ফলে পূর্বপাশে বসবাস করা শ্রীকৃষ্ণ মন্ডলের পরিবারসহ ৬০টি পরিবারের যাতায়াতের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। পূর্বপাশের স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় ৫ শতাধিক লোক প্রাচীরের দক্ষিণ পার্শ্ব দিয়ে এসে পশ্চিম দিক দিয়ে মূল রাস্তায় প্রবেশ করতো। পূর্বপাশের ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলের পশ্চিম পার্শ্ব দিয়ে থাকা একমাত্র গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। অথচ দক্ষিণ পাশের রাস্তা পুরোটাই বন্ধ করে পশ্চিম পার্শ্বে নিমাই মন্ডল পরিবারের বাড়ী সংলগ্ন স্কুলের ১৫ ফুট জায়গা খালি রেখে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়।
অভিযুক্ত দিলীপ সরকার বলেন, এখানে সীমানা নিয়ে জটিলতা আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলেছি দেয়াল একটু সরিয়ে উঠাতে। তারা যদি না উঠায় তাহলে ঐ পরিবারের যাতায়াতের অসুবিধা হলে পরে আমি গাছ কেটে দিব।
পূর্ব হাঁসাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আকবর বলেন, স্কুলের দেয়াল নির্মাণ করার পূর্বে সরকারী তদন্ত টিম এসে পরিদর্শন করে গেছে। সেই অনুযায়ী দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ আলামিন বলেন, আমরা দিলীপকে গাছ কাটার কথা বলেছি। না কাটলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে।
এ ব্যাপারে হাঁসাড়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান সোলাইমান খান বলেন, ভুক্তভোগী ঐ পরিবাররা আমার কাছে একটি দরখাস্ত নিয়ে এসেছিল। আমি রি-কমান্ড করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পাঠিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোশারেফ হোসাইন বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।