নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদ এলেই প্রতিবছর নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের ঢল নামে দেশের দক্ষিণ বঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশপথ খ্যাত মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট এলাকায়। বিভিন্ন নৌ-যানে পদ্মা পাড়ি দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছায় লাখ লাখ মানুষ। তবে করোনা করোনা সংক্রমণ রোধে আসন্ন ঈদুল ফিতরের ছুটিতে গ্রামে যেতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে সরকারি এ নির্দেশনা উপেক্ষা করেই ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে থাকা দক্ষিণবঙ্গের সাধারণ মানুষ মরিয়া হয়ে উঠেছে বাড়ি ফিরতে। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাত থেকে পুলিশি নজরদারি ডিঙ্গিয়ে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক হয়ে বিভিন্ন পরিবহনে ও পায়ে হেঁটে শিমুলিয়া ঘাটে জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ। তবে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরিসহ সকল ধরনের নৌ-চলাচল বন্ধ থাকায় দিনভর চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে তাদের। ঘাট এলাকায় অত্যাধিক মানুষের জমায়াতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে দুপুর থেকে বাসে করে যাত্রীদের ঢাকায় ফেরত পাঠায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
যাত্রীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, একদিকে কর্মস্থল বন্ধ অন্যদিকে মালামাল নিয়ে বাসাবাড়ি ছেড়ে চলে আসায় বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামে ফিরছে তারা। এখন গ্রামে ফিরতে না পারলে রাস্তায় দিন কাটাতে হবে।
জরুরি প্রয়োজনীয় পণ্য ও অ্যাম্বুলেন্সের জন্য নৌরুটে সচল থাকা ২টি ফেরি ঘাটে নোঙ্গর করা মাত্রই যাত্রীরা উঠে পড়ছে সেখানে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে কেউ কেউ।
তবে কখন ফেরি চলাচল করবে এ ব্যাপারে একাধিকবার বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে টানা ৪র্থ দিনের মত এদিনও করোনা সংক্রমণ রোধে ঢাকা থেকে শিমুলিয়া ঘাটমুখী এসব মানুষকে গ্রামে ফেরা থেকে বিরত রাখতে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে কড়াকড়ি অবস্থান নিয়েছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয় চেকপোস্ট। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে শিমুলিয়া ঘাটে যেতে বারণ এবং পুনরায় ফেরত পাঠানো হয়েছে ঢাকায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মুন্সীগঞ্জ মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ফেরি বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় যারা ঘাটে এসে পৌঁছেছে তাদের দুর্ভোগ লাঘবে বাসে করে ঢাকা ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, যাত্রী ও যানবাহনের চাপ অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় গত সোমবার বেলা ২টা থেকেই শিমুলিয়া ঘাটে বন্ধ করে দেওয়া হয় ফেরি চলাচল। শুধুমাত্র ২টি ফেরি দিয়ে এম্বুলেন্স ও প্রয়োজনীয় পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী এভাবেই চলবে বলে জানায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ।