বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে – মোহাম্মদ মহিউদ্দিন
পলাতক বাকী আসামীদেরও দেশে ফিরে এনে আদালতের রায় কার্যকর করতে হবে – এড. নজীবুল্লাহ হিরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় জীবনের বিভিন্ন স্মৃতি কথা তুলে ধরে বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়ন ও বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে বিশ^সভায় বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারী খুনিদের সুরক্ষায় প্রণিত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মতো কালো আইনের প্রবক্তা খুনি মোশতাক-জিয়া চক্র এবং তাদের উত্তরসূরী বিএনপি-জামাত অপশক্তির কোনো ক্ষমা নেই। আগামী প্রজন্ম তাদেরকে ক্ষমা করবে না।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস আরো বলেন, ইতিহাসের ঘৃণিত কালো আইন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করে খুনি মোশতাক ও জিয়াউর রহমান চক্র। খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে অন্যতম জেনারেল জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে উক্ত অধ্যাদেশটি সংসদে অনুমোদনক্রমে আইনে পরিণত করা হয়। সেদিন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি শুধু সংবিধান লঙ্ঘন করেনি, তা একইসঙ্গে সার্বজনীন মানবাধিকার সনদও লঙ্ঘন করেছে।
তিনি বলেন, ভাবতে পারেন যিনি একটি স্বাধীন দেশ- একটি সার্বভৌম ভূ-খন্ড, একটি মানচিত্র, একটি পতাকা উপহার দিলেন সেই জাতির সেই মহান স্থপতির খুনি, তারই কনিষ্ঠ পুত্র নিষ্পাপ অবুঝ শিশু শেখ রাসেল, আত্মীয় সুকান্ত বাবু এবং অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধু আরজু মনি, স্ত্রী বেগম মুজিবসহ ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার করা যাবে না। এটা কোনো নরক রাজ্যের উপাখ্যান নয়। এটা এই বাংলাদেশে কিছু নরকের কীট, নরপশু বেইমান জাতিদ্রোহী কর্তৃক সংঘটিত ঘটনা। জাতি হিসেবে আমাদের ললাটে কলঙ্কের কালিমা এঁকে দিয়ে গেছে সেই ঘাতক নরপশুরা। এমনকি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের ন্যায় কালো আইনও আমাদের বুকের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, আর যেন বাঙালি জাতিকে সেই কালো আইনের প্রবক্তা, বঙ্গবন্ধুর খুনি, জাতি-দ্রোহী, দেশদ্রোহী, মানবতা ও আইনের শত্রুদের কবলে পড়তে না হয়। তাদের লালনকারী বিএনপি-জামাত অশুভ শক্তি যেন আর রাজনীতিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে তা প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক নাগরিককে খেয়াল রাখতে হবে। এই অপশক্তির চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত করার পর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সুন্দর ও পরিছন্ন রাজনীতির ধারা প্রবর্তনের পথে এগিয়ে নিতে হবে আগামী প্রজন্মকে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. নজীবুল্লাহ হিরু বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের পর দেশে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে খুনিচক্র। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ পর্যন্ত করা যায়নি। এমনকি নারকীয় ঘৃণ্য এই হত্যাকান্ডের বিচার পর্যন্ত চাওয়া যায়নি। ন্যায় বিচার থেকে জাতিকে যুগের পর যুগ বঞ্চিত করা হয়েছে। আদালতে মামলা করার পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর যথাযথ ন্যায় বিচারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার কার্য সম্পন্ন হয়েছে এবং কয়েকজন নরপিচাশ খুনিদের বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। পলাতক বাকী আসামীদেরও দেশে ফিরে এনে আদালতের রায় কার্যকর করতে হবে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহীন মোঃ আমানউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন এড. গোলাম মাওলা তপন, এড. অজয় কুমার চক্রবর্তী, আলতাফ হোসেন প্রমুখ।