নারী নেত্রী আইভী রহমান স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভা
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, খালেদা-তারেক-নিজামীর নেতৃত্বে বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল। তখন বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ভয়াবহ উত্থান ঘটেছিল। সন্ত্রাস ও জঙ্গি নেতারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দানবীয় রূপ ধারণ করেছিল। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ২১ আগস্টের মতো ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হমালায় নিহত নারী নেত্রী আইভী রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মহাকালী ইউনিয়নের বাগেশ^র বাজারের মোহাম্মদ আলী কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত দোয়া ও স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। মহাকালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহাসীনা হক কল্পনা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান রিপন, বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান শরীফ, পৌর কাউন্সিলর নার্গিস আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংষ্কৃতিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ পিন্টু, সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক জেসমিন আক্তার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হুমায়রা আক্তার রিমা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন হাওলাদার, ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি হানিফ শিকদার প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, ২১ আগস্ট সভ্যতার ইতিহাসে একটি ঘৃণিত ও নৃশংসতম ভয়াবহ হত্যাকান্ড। একটি বীভৎস রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের শান্তিপূর্ণ সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের সমূলে হত্যার উদ্দেশ্যে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নারী নেত্রী বেগম আইভী রহমানসহ ২২ জন নেতা-কর্মী প্রাণ হারায়। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, খালেদা-তারেক-নিজামীর নেতৃত্বে বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ভয়াবহ উত্থান ঘটেছিল। বাংলাদেশের উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও তার গর্ভে জন্ম নেওয়া জঙ্গি তৎপরতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বারবার সামনে চলে আসে পাকিস্তান, জামাত, শিবির ও বিএনপির নাম। স্বাধীন বাংলাদেশে মেজর জেনারেল জিয়া ও বঙ্গবন্ধুর অন্যান্য খুনিরা উগ্র-সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষবৃক্ষ রোপণ করেছিলেন আর জামাতের পরিচর্যায় খালেদা-তারেক জঙ্গিবাদের মতো ভয়াবহ দানবকে আশ্রয় দিয়েÑ অক্সিজেন দিয়ে শক্তিশালী করে তুলেছেন।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের এই হত্যাকান্ডের বিচারের ব্যাপারে তৎকালীন বিএনপি সরকার নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছিল। শুধু তাই নয়, এই হামলার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের রক্ষা করতে সরকারের কর্মকর্তারা ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এ ধরনের হামলা কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দ্বারা সম্ভবপর নয়। এই ঘটনার সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দিনদুপুরে রাজধানী ঢাকায় বিদেশ থেকে মরণাস্ত্র আর্জেস গ্রেনেড আনা হলো, লস্করে তৈয়বার মতো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতা আসলো ঢাকায়। তারপরও তাদের কোথাও কোন বাঁধা সৃষ্টি করা হলো না।
তিনি বলেন, ২১ আগস্টের মামলায় সাক্ষী ও আসামীদের জবানবন্দীতে বেরিয়ে এসেছে সেদিনের বিএনপি-জামাত জোট সরকার, প্রশাসন, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন কর্তাব্যক্তি হত্যাকারীদের হামলা করা থেকে শুরু করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা করে। পুলিশ সন্ত্রাসীদের ধরার চেষ্টা না করে হামলার পর আহত নেতাকর্মীদের উপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে, যাতে সন্ত্রাসীরা নিরাপদে বের হয়ে যেতে পারে। রমনা থানায় মামলা করতে গেলে উপরের অনুমতি ব্যতীত মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায় পুলিশ। তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই অবিস্ফোরিত গ্রেনেডসহ সব আলামত নষ্ট করে ফেলা হয়। এমনকি এই মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জজ মিয়া নাটক পর্যন্ত সাজানো হয়েছে।
খালেদা-তারেক-নিজামী জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল – অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি
আগের পোস্ট