বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা : মোহাম্মদ মহিউদ্দিন
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের লালন-পালনকারী বিএনপি-জামাতকে রাজনৈতিক নির্বাসন দিয়েছে বাংলার জনগণ : এড. মৃণাল কান্তি দাস এমপি
নিজস্ব প্রতিবেদক : মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ¦ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেছেন স্বাধীনতা বিরোধীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশকে পাকিস্তানী রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। তারা ব্যর্থ হয়েছে। আজ যদি তিনি বেচেঁ থাকতেন তাহলে দেশ আরো এগিয়ে যেত। এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি চারন করে বলেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নেপথ্যে ইন্ধনদাতা ছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পুনর্বাসন করেছেন, খুনীদের বিচার করার পরিবর্তে হাইকমিশনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন
বঙ্গবন্ধু ছিলেন উদার, বঙ্গোপসাগরের মতো গভীরতার মানুষ। বাংলার মানুষের ভালোবাসার সাথে বেঈমানী করেননি। সেই মহামানবকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজ তারই কন্যা জন নেত্রী শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন । দেশের প্রতিটি সেক্টরে নজির বিহীন উন্নয়ন হয়েছে যা দৃশ্যমান। গতকাল মুন্সীগঞ্জ আইনজীবী সমিতির আয়োজনে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, ১৫ আগস্টের খুনিদের লালন-পালনকারী বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোটকে রাজনৈতিক নির্বাসনে পাঠিয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা এবং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মতো কালো আইনের কলঙ্ক লেপনকারীদের বাংলার রাজনীতিতে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না জনগণ।
গতকাল মুন্সীগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে জেলা বার সমিতির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমানুল্লাহ শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মো. মহীউদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এমপি। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এইচ এম শফিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশফাকুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সোহানা মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, শ ম হাবিবুর রহমান, নাসির উদ্দিন, শামসুন নাহার শিল্পী, গোলাম মাওলা তপন, অজয় চক্রবর্তী, সলিল সরকার, নাসিমা বেগম, অ্যাডভোকেট এস আর মিলন প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, জাতি হিসেবে আমাদের দুভার্গ্য আমরা আমাদের জাতির পিতাকে রক্ষা করতে পারিনি। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আর কয়েকজন কুলাঙ্গার নরপশুর নৃশংসতার শিকার হয়ে স্বাধীনতার মহান স্থপতিকে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। এমনকি রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যাকারীদের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে এবং পুরস্কৃত করার ঘটনাও ঘটেছে। ইতিহাসের ঘৃণিত কালো আইন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করে খুনি মোশতাক ও জিয়াউর রহমান চক্র। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের যাতে বিচারের সম্মুখীন হতে না হয় সে জন্য খুনি খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে আর জিয়া তা আইনে পরিণত করেন।
তিনি বলেন, খুনি মোশতাক-জিয়া চক্র ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে শুধু সংবিধান লঙ্ঘন করেনি, তারা একই সঙ্গে সার্বজনীন মানবাধিকার সনদও লঙ্ঘন করেছে। স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার সেদিন জাতির ছিল। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বজায় থাকায় আইন নিজস্ব গতিতে চলেনি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দ্বারা দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ রুদ্ধ ছিল। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি মৌলিক মানবাধিকার এবং সংবিধানে সংরক্ষিত মৌলিক অধিকার ও আইনের শাসনের পরিপন্থী।
তিনি বলেন, আইন সবার জন্য সমান। কিন্তু দেশে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে আইনের শাসনের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছিল। ভাবতে পারেন যিনি একটি স্বাধীন দেশ- একটি সার্বভৌম ভূ-খন্ড, একটি মানচিত্র, একটি পতাকা উপহার দিলেন সেই জাতির সেই মহান স্থপতির খুনি, তারই কনিষ্ঠ পুত্র নিষ্পাপ অবুঝ শিশু শেখ রাসেল, আত্মীয় সুকান্ত বাবু এবং অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধু আরজু মনি, স্ত্রী বেগম মুজিবসহ ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার করা যাবে না। এটা কোনো নরক রাজ্যের উপাখ্যান নয়। এটা এই বাংলাদেশে কিছু নরকের কীট, নরপশু বেইমান জাতিদ্রোহী কর্তৃক সংঘটিত ঘটনা। জাতি হিসেবে আমাদের ললাটে কলঙ্কের কালিমা এঁকে দিয়ে গেছে সেই ঘাতক নরপশুরা। এমনকী ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের ন্যায় কালো আইনও আমাদের বুকের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, আর যেন বাঙালি জাতিকে সেই কালো আইনের প্রবক্তা, বঙ্গবন্ধুর খুনি, জাতি-দ্রোহী, দেশদ্রোহী, মানবতা ও আইনের শত্রুদের কবলে পড়তে না হয়। তাদের লালনকারী বিএনপি-জামায়াত অশুভ শক্তি যেন আর রাজনীতিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে তা প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক নাগরিককে খেয়াল রাখতে হবে। এই অপশক্তির চূড়ান্ত পরাজয় নিশ্চিত করার পর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ধারা প্রবর্তনের পথে এগিয়ে নিতে হবে আগামী প্রজন্মকে।