নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এক বিবৃতিতে উপ-মহাদেশের বৃহত্তম ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগের সকল নেতা-কর্মী-সমর্থক ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও অভিবাদন জানিয়েছেন এবং ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বাঙালির গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামে আত্মদানকারী ছাত্রলীগের সকল নেতা-কর্মীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রগতিশীল আদর্শের ছাত্র নেতাদের সমন্বয়ে ১৯৪৮ সালের ৩ জানুয়ারি বাঙালির জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্নিশপথ নিয়ে যাত্রা শুরু করে ছাত্রলীগ। প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা ভাষা বাংলার দাবি, ’৪৯-এর ১১ অক্টোবর খাদ্য মিছিল, ’৫০-এর ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলে সাত রাজবন্দিকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ, ’৫০-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবিরোধী কর্মসূচি এবং ’৫২-র ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্বের বাঙালির অধিকার আদায়ের বিশ^স্ত সংগঠনে পরিণত হয় ছাত্রলীগ। ’৫৪-এর নির্বাচন, ’৬২ ও ’৬৪-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধ, ’৬৬-এর ছয়-দফা, ’৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১১-দফা, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচনে বাংলার ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধিকার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ছাত্রলীগ। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা, স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন ও ৭১’র অসহযোগ আন্দোলনে সাহসী ভূমিকা পালন করে ছাত্রলীগ। ’৭১-এর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় চূড়ান্ত সংগ্রামের আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা করেনÑ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ২৫ মার্চ কালরাতে পাকবাহিনী নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করলে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। ১০ এপ্রিল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন এই সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে ছাত্রলীগের লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের যে অবদান পৃথিবীর অন্য কোন ছাত্র সংগঠনের ক্ষেত্রে মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্জনে এমন আত্মত্যাগের ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির পতাকাবাহী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ত্যাগ, তিতিক্ষা, দেশপ্রেম ও অগ্রগতির প্রতীক। প্রগতিশীল নীতি, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী আদর্শ ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করে আসছে ছাত্রলীগ। নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ও আদর্শভিত্তিক রাজনীতি চর্চার ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকলকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও অভিবাদন।
তিনি বলেন, আশা করি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবো এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেমের বহ্নিশিখা প্রজ্জ্বল করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত সমাজ বিনির্মাণে সর্বাত্মক আত্মনিয়োগ নিশ্চিত করবে।