নিজস্ব প্রতিবেদক
গত ২৩ আগস্ট ২০২১ইং তারিখে দৈনিক ইত্তেফাকে “মেঘনায় থ্রি এঙ্গেলের থাবা” শীর্ষক সংবাদটির প্রতিবাদ জানিয়েছেন থ্রি এঙ্গেল মেরিন লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নৌস্থপতি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম। তিনি উক্ত সংবাদটি মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া এবং দেশের শিল্প সম্প্রসারণে বাঁধা বলে উল্লেখ করেছেন। প্রতিবাদলিপিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, বিগত ২০০৯ সালে জমি ক্রয় করে ২০১০ সাল হতে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়ার নয়ানগর মৌজায় থ্রি এঙ্গেল মেরিন লিমিটেড নামে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। ২০১০ইং সালে শিপবিল্ডিং ইন্ডাষ্ট্রি হিসাবে এর আত্মপ্রকাশ। ঢাকা শহরের চারিদিকে বৃত্তাকার নৌপথ চালুর জন্য বিআইডব্লিউটিসি এর নিজস্ব অর্থায়নে ২টি ওয়াটার ট্যাঙ্ক বানানোর মাধ্যমে কাজ শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানটি। তারপরে আর থামতে হয়নি। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ৩৫টি ওয়েল ট্যাঙ্কার, বিআইডব্লিউটিএ এর ৬টি সার্ভে ভেসেল, ৮টি অ্যালুমিনিয়াম ওয়ার্কবোট, ৬টি μেন বোট, ১টি টাগ বোট, অসংখ্যক পল্টুন, বার্জ, হাউজবোট সহ গত ১০ (দশ) বছরে প্রায় ২০০ (দুইশত) টির অধিক জলযান নির্মাণপূর্বক ডেলিভারি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়াস্থ নয়ানগর মৌজায় প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান। মোট ভূমির প্রায় ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশ জমি সবুজায়ন করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির একপাশে নয়ানগর গ্রাম, একপাশে গোসাইরচর গ্রাম, একপাশে মেঘনা নদী এবং একপাশে ফুলদি নদী অবস্থিত। গজারিয়া অঞ্চলটি নদী পরিবেষ্টিত হওয়ায় বর্ষাকালে অধিকাংশ এলাকায় পানি উঠে যায়। তাই বর্ষাকালে দেখলে মনে হয় প্রতিষ্ঠানটি নদীর মধ্যে অবস্থিত। গত অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি বেশকিছু উল্লেখযোগ্য নৌযান ডেলিভারি দেয়। এর মধ্যে “রো রো ফেরি বেগম রোকেয়া” এবং “সুফিয়া কামাল” দ্বারা বিআইডব্লিউটিসি আরিচা থেকে কাজিরহাট পর্যন্ত নতুন একটি রুট চালু করে। ফলে ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গের বেশকিছু জেলার যাতায়াত সুগম হয়। বিআইডব্লিউটিএ- এর অর্থায়নে ট্রেনিং শিপ “ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরি (দাদাভাই)” আর একটি উল্লেখযোগ্য নৌযান এটি বাংলাদেশে তৈরী প্রথম ট্রেনিং শিপ। এছাড়া সন্দিপ-হাতিয়া-চট্টগ্রাম রুটে “এমভি তাজউদ্দিন আহমেদ” নামে বাংলাদেশে তৈরী প্রথম উপকূলীয় যাত্রীবাহী নৌযান থ্রি অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেড কর্তৃক নির্মাণপূর্বক ডেলিভারি দেয়া হয়েছে। নৌযানটি উপকূলবাসীর জন্য একটি বিশাল আর্শিবাদস্বরূপ। ফলে অসংখ্য গরীব মানুষ নিরাপদে তাদের গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারছে। আমাদের দেশে ঝড়ো মৌসুমে ক্যাটামেরান বা ডাবল-হাল নৌযান চলাচল যাত্রী সাধারণের জন্য অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। এই পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে একজন প্রভাবশালী লঞ্চ ব্যবসায়ীকে মোটিভেশনের মাধ্যমে “এমভি রিপল” নামে যাত্রীবাহী প্রথম ক্যাটামেরান নৌযানটি এই প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্মাণ করা হয়। উক্ত নৌযানটি নিরাপদে ঢাকা-চাঁদপুর রুটে চলাচল করছে। এর ধারাবাহিকতায় ঢাকা-বরিশাল রুটেও এই জাতীয় ২/১ টি নৌযান চলাচল করছে।
প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করা। সেলক্ষ্যেই সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করে সুনাম অর্জন করেছে। এছাড়া সরকারি দরপত্রের চাহিদা মোতাবেক সমস্ত লাইসেন্স পাওয়ার পরই কার্যক্রম শুরু করা হয়। ইতিমধ্যে বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি এর প্রায় শতাধিক নৌযান নির্মাণ কাজ সন্তোষজনকভাবে সম্পাদন করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে এই শিপইয়ার্ডে বিআইডব্লিউটিসির ২০টি নৌযানের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। যার ক্রয়াদেশ মূল্য ৪৫০ কোটি টাকা। গত ১০ বছরে ১০০০ কোটি টাকার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে শিল্পোন্নয়নে অবদান রেখে আসছে। একইসঙ্গে সরকারের রাজস্ব খাতে ১০০ কোটি টাকা জমা দিয়ে রাজস্ব প্রদানের ক্ষেত্রেও সুনাম কুড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, এ প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানের অগ্রযাত্রায় ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষরা প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতি করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। উন্নয়ন কর্মকান্ডে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। বর্তমান সরকার যখন শিল্পোন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে ঠিক তখনই প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠান থ্রি এঙ্গেল মেরিন লিমিটেডের বিরুদ্ধে কতিপয় অসাধু চক্র অপপ্রচার ও মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই শিল্পের উন্নয়ন ও অগ্রগতি। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের মাধ্যমে যেমন দেশের শিল্পের অগ্রগতি ও সফলতা অর্জন করেছে থ্রি এঙ্গেল তেমনি ১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। বলা চলে, নৌ শিল্পের অগ্রযাত্রা ও সম্প্রসারণে থ্রি এঙ্গেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে তা বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। এটি কুচক্রীমহলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। যা দেশের প্রগতিশীল একটি খাতকে ধ্বংস করে দেয়ার পাঁয়তারা। আমরা অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছি। এই থ্রি এঙ্গেল কোন ধরনের খাল বা নদী ভরাটের কাজে জড়িত নয়। কাজেই এ ধরনের ষড়যন্ত্র না করে থ্রি এঙ্গেলের উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা করে দেশের শিল্পোন্নয়নে সহযোগিতা করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা চাই, এই শিল্পের উন্নয়ন ও অগ্রগতি। আর সেলক্ষ্যেই সরকারের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই থ্রি এঙ্গেলের কর্মকান্ড সম্পর্কেও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল অবহিত রয়েছেন। তাই আমরা সরকারের পক্ষ থেকে আরো সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
থ্রি এঙ্গেলের অগ্রযাত্রা রুখতে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার ; সরকারের সহযোগিতা কামনা
আগের পোস্ট