নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেছেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প আমাদের জাতিগত স্বপ্ন-সমৃদ্ধি ও সক্ষমতার প্রতীক। সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও অগ্রগতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বাংলাদেশ।
গতকাল সোমবার মুন্সীগঞ্জে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে আয়বর্ধকমূলক প্রশিক্ষক প্রদানের জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও জেলা পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে কম্পিউটার বেসিক এন্ড আইসিটি অ্যাপ্লিকেশন কোর্সের প্রথম ব্যাচের সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সনদ ও ভাতা প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এসময় ৪০ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ ও ভাতা তুলে দেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মরিয়ম আক্তার। এসময় উপস্থিত ছিলেন পিএনবিটি’র নির্বাহী প্রকৌশলী রজব আলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. গোলাম মাওলা তপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মনিরুজ্জামান রিপন প্রমুখ।
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দুঃখ মোচনের সোপান। পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া জগৎসভায় আমাদেরকে উচ্চ-মর্যাদায় আসীন করেছে। পদ্মাসেতু দুষ্ট-মানব সৃষ্ট অন্ধকারের অচলায়ন ভেদ করে আলোর পথে যাত্রা করতে শিখিয়েছে। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার অনন্য প্রতীক। আর এ সবেরই স্বার্থক রূপকার আমাদের সকল স্বপ্ন-জয়ের সারথি দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে বাংলাদেশের বিশাল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করে আধুনিক উন্নত সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাষ্ট্র গড়ে তুলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমাদের জাতীয় জীবনে অনেক সমস্যা, সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে আশার কথা এই যে, বাংলাদেশ আজ জগৎ সভায় উন্নয়নের রোল মডেল। একদা পৃথিবীতে বাংলাদেশের পরিচয় ছিল বন্যা, দুর্ভিক্ষ, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের দেশ। আজ জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘকালের লালিত আকাক্সক্ষা প্রমত্ত পদ্মার উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের স্বপ্ন আজ দৃশ্যমান বাস্তবতা। পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করতে বিশ্বখ্যাত সুদখোর এক ব্যক্তি ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং বাংলাদেশ বিরোধী একটি অপশক্তি গভীর ষড়যন্ত্রে করেছে। এমনকি এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে যাওয়ার আগে বেগম খালেদা জিয়া ব্যাঙ্গ করে দিয়ে বলেছিলেন- জোড়াতালির পদ্মা সেতুতে উঠবেন না। তাদের মিলিত ষড়যন্ত্রে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করার সে ষড়যন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে জগৎসভায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মসংস্থান নীতির মূল লক্ষ্য উৎপাদনমুখী কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের অদক্ষ জনগোষ্ঠীকে আধা দক্ষ ও দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা। এ লক্ষ্য অর্জনেÑ মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হয়েছে। মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাত উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রশিক্ষিত যুবক, যুব মহিলাদের সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ‘ন্যাশনাল সার্ভিস’ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি করা হয়েছে। কৃষি ও সেবা খাতে কর্মসংস্থানের বিদ্যমান সুযোগ আরও সম্প্রসারিত করা হচ্ছে এবং ব্যাপক সামাজিক কর্মসংস্থান প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এজন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন, বৃত্তি এবং পেশা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাকে সমন্বিত ও প্রসারিত করা হচ্ছে।