নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর মুন্সীগঞ্জের অধিকাংশ হিমাগারে আলু বিক্রি হঠাৎ বন্ধ হয়েছে। দাম বাড়ানো না হলে আলু বিক্রি করবেন না বলে জানিয়েছেন আলু ব্যবসায়ীরা। এদিকে হিমাগার থেকে আলু আনতে না পারায় সংকট দেখা দিয়েছে খুচরা বাজারে। নতুন করে সরকার নির্ধারিত দামে আলু কিনতে না পারায় খুচরা পর্যায়ে আলু বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মুন্সীগঞ্জ পৌর এলাকা ও আশপাশের বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে খুচরা বাজারে আলুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। গত বৃহস্পতিবার সরকার আলুর দাম খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং হিমাগার পর্যায়ে ২৬ থেকে ২৭ টাকা বেঁধে দেয়। তবে এই দাম মানেননি ব্যবসায়ীরা। হিমাগার পর্যায়ে ৩৯ থেকে ৪০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করতে থাকেন ব্যবসায়ীরা। গত শনিবার মুন্সীগঞ্জে হিমাগার পরিদর্শনে যান জাতীয় ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান। হিমাগার পরিদর্শন শেষে গত রোববার থেকে পাকা রসিদের মাধ্যমে ২৬ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে পাইকারি এবং খুচরা বাজারে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকায় বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন তিনি। তবে এ নির্দেশনা হিমাগার ও বাজার পর্যায়ের কোথাও বাস্তবায়ন হয়নি।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার হিমাগার পর্যায়ে আলুর দাম বেঁধে দিয়েছে। এই দামে হিমাগারের মজুতদাররা আলু বিক্রি করছেন না। ফলে তারা আলু কিনতে পারছেন না। বেশি দামে আলু কিনে আনলে খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। সেক্ষেত্রে তাদের আবার জরিমানার মুখে পড়ার আশঙ্কা আছে। তাই তারা আলু কেনা বন্ধ রেখেছেন।
সুপার মার্কেট এলাকায় কাঁচাবাজারের আলু বিক্রেতা মহাসিন বলেন, আমরা মুন্সীগঞ্জের হিমাগারগুলোতে গিয়েছিলাম। সেখানে কেউ আলু বিক্রি করছেন না। তাই বাধ্য হয়ে পাশর্^বর্তী জেলার আড়ৎ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে আলু কিনেছি। ভাড়াসহ ৪০ টাকা দাম পড়েছে। সে দামেই এখন আলু বিক্রি করছি। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, নির্ধারিত দামে যেন আলু বিক্রি হয় সেদিকে খেয়াল রাখছি। দাম বেশি রাখার বিষয়টি গুরত্ব সহকারে দেখছি। খুব শিগগির বাজার পরিস্থিতি ঠিক হয়ে আসবে।
নিপ্পন কোল্ডস্টোরেজ এলাকায় মোরশেদ খান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা আলু বিক্রি করতে চাই। তবে সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সে দামে লাভ হয় না।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিফা বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে খুচরা ও হিমাগার পর্যায়ে আলু বিক্রি নিশ্চিত করতে বাজার ও হিমাগারগুলোতে তদারকি চলছে।