নিজস্ব প্রতিবেদক : মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলার আসামি মোঃ সুমনকে (৫০) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ হতে বিচারকার্য শেষে কোর্ট হাজতে নেওয়ার সময় আদালতে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের কনস্টেবল আবু তাহের রোবেল ও সুমন খানের সামনে মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের ৮ম তলার বারান্দায় মামলার বাদীসহ তাদের আত্মীয়স্বজনেরা আসামি সুমনকে পুলিশের বাধা সত্ত্বেও চর-থাপ্পর মারতে শুরু করে। আদালত প্রাঙ্গণে বাদীপক্ষের লোকজনের মধ্য হতে অভিযুক্ত সদর উপজেলার নৈদিঘীর পাথর গ্রামের আকলিমা (৬০), শফিজল ইসলাম (৩০), মফিজুল ইসলাম (৩৮) ও মাসুদ রানা (৪৯) কে পুলিশ আটক করে। এ ঘটনায় কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোঃ কামরুল ইসলাম মিঞা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (জাস্টিস অফ পিস) গাজী দেলোয়ার হোসেনের সম্মুখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ উপস্থাপন করেন। প্রকাশ্য আদালতে উক্ত লিখিত অভিযোগের বিষয়ে শুনানিকালে অভিযুক্ত ওই ৪ জন তাদের ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এসময় আদালতে বিচারকের জিজ্ঞাসায় অভিযুক্ত ৪ জন তাদের সঙ্গীয় একই গ্রামের আল আমিন (৩২), বর্ষা আক্তার (২৭), মুক্তা বেগম (২৫), বীথি আক্তার (২৭), হেলেনা বেগম (৬১), শাহিন (৫৫), শাহাদাত হোসেন পাপ্পু (৩২), রাসেল (৩৩) তাদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। এসময় বিচারিক আদালত সকল অভিযুক্তকে প্রকাশ্য আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিলে সকলেই আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
অভিযুক্তরা প্রকাশ্য আদালতে ভবিষ্যতে এরকম গর্হিত কাজ করবে না বলে মুচলেকা দিতে চান। উভয়পক্ষের শুনানীঅন্তে আদালত অভিযুক্তদের হত্যা মামলায় তাদের স্বজন হারানোর ব্যথা আবেগ ও অনুভূতি এবং আদালত প্রাঙ্গণে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অপরাধের বিষয়ে বিবেচনাপূর্বক অভিযুক্ত সকলকে আদালতের ডকেটে ৪ ঘণ্টার জন্য আটক রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
এ ব্যাপারে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোঃ কামরুল ইসলাম মিঞা জানান, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ২৫ ধারার বিধান মতে আদালত (জাস্টিস অফ পিস) এর ক্ষমতা প্রয়োগ করে আদালতের ডকে ৪ ঘণ্টা জন্য অভিযুক্তদের আটক রাখার আদেশ দেন। পরে অভিযুক্তরা সৎ ব্যবহারের মুচলেকা দাখিল করায় আদালত তাদের মুক্তি দেন।
এ ব্যাপারে হত্যা মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ আরিফ আহম্মেদ জানান, মামলার বাদীর মেয়ে শ্রাবন্তীকে কুপিয়ে হত্যা করায় আজ আদালতে আসামিকে দেখে তারা সহ্য করতে না পেরে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এর জন্য অভিযুক্তরা প্রকাশ্য আদালতে ক্ষমা চেয়েছে। আদালত তাদের ৪ ঘণ্টা ডকে আটক রেখে মুচলেকার মাধ্যমে মুক্তি দেন।
প্রসঙ্গত, গেল ২০ মে সদর উপজেলার রিকাবিবাজার এলাকায় মিতু আক্তার শ্রাবন্তী (৩২) কে কুপিয়ে হত্যা করায় তার স্বামী মোঃ সুমনকে আটক করে পুলিশ। পরে আসামি সুমন আদালতে হত্যার বিষয়ে দোষ স্বীকার করেন। হত্যা মামলায় গতকাল সোমবার আসামিকে বিচারকার্য শেষে পুলিশ হেফাজত নেওয়ার সময় অভিযুক্তরা সুমনকে মারধর করে।